বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মামলা করাই কাল হয় প্রবাসী শ্যামলের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২২ জুন, ২০২৩ ১৫:২১

গ্রেপ্তার তিনজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, শাহাদাত বেপারীর নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ১৪ জুন রাতে শ্যামলকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেন।

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় প্রবাসী শ্যামল বেপারী হত্যার মূল পরিকল্পকারী শাহাদাত বেপারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

বুধবার রাতে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-১৪-এর অভিযানে মুন্সীগঞ্জ সদর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও গোলাবারুদ এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে জানায় বাহিনীটি।

র‌্যাবের ভাষ্য, আধিপত্য বিস্তার করতে মুন্সীগঞ্জ সদর এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন শাহাদাত বেপারী। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্থানীয় কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে শাহাদাতের সন্ত্রাসী বাহিনী। এ ঘটনায় আহতদের আত্মীয় প্রবাসী শ্যামল বেপারী মামলা করেন। শাহাদাত আত্মগোপনে থাকলেও ওই মামলায় তার ছেলে মহিউদ্দিন গ্রেপ্তার হন।

বাহিনীটি জানায়, মামলার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আত্মগোপনে থাকা অবস্থাতেই শ্যামলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শাহাদাত। জামিন নিয়ে ছাড়া পাওয়ার পর গত ১৪ জুন মুন্সীগঞ্জ সদর থানার পূর্বরাখি এলাকায় গভীর রাতে প্রবাসফেরত শ্যামল বেপারীকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় করা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ওই তিনজন হলেন শাহাদাত বেপারী, তার ছেলে মহিউদ্দিন বেপারী ও হায়াতুন ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে যা জানাল র‌্যাব

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বৃহস্পতিবার দুপুরে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারকৃতদের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গ্রেপ্তার তিনজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, শাহাদাত বেপারীর নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ১৪ জুন রাতে শ্যামলকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেন। এলাকায় ট্রলার ঘাটের ইজারা, নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন, আধিপত্য বিস্তার ও জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে শ্যামলের নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে শাহাদাতের বিরোধ চলছিল। পাঁচ থেকে ছয় মাস আগে শ্যামলের নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিষয় এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শাহাদাতের বাগ্‌বিতন্ডা ও ঝগড়া হয়। এর জেরে শ্যামলের সঙ্গেও শাহাদাতের বাগ্‌বিতন্ডা, ঝগড়া হয়।

র‌্যাব জানায়, গত ফেব্রুয়ারিতে শাহাদাতের পরিকল্পনা ও উপস্থিতিতে শ্যামলের আত্মীয়দের স্থানীয় বাজারে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনায় শ্যামল বাদী হয়ে শাহাদাত ও তার ছেলে মহিউদ্দিনসহ অন্য সহযোগীদের নামে মামলা করেন।

ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শাহাদাত আত্মগোপনে যান, কিন্তু তার ছেলে মহিউদ্দিন বেপারী ও তার এক সহযোগী গ্রেপ্তার হন। পরে শাহাদাত ও তার ছেলে আদালত থেকে জামিন পান।

র‌্যাবের মুখপাত্র জানান, মামলার কারণে আত্মগোপনে থাকার সময়ে শ্যামলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শাহাদাত বেপারী। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শাহাদাত আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল ও ধারালো অস্ত্র সংগ্রহ করে রাখেন। তিনি ১৫ থেকে ২০ জনকে নিয়ে ১৪ জুন রাত দেড়টার দিকে শ্যামলের বাড়ির চার দিক ঘেরাও করে হামলা চালান। তারা শ্যামলের ঘরে ঢুকে শ্যামলকে গুলির পাশাপাশি এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পর তারা গুলি করে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

র‌্যাবের কমান্ডার জানান, নিহত শ্যামল বেপারী ২০০৪ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে চাকরি করেন। ২০২২ সালের জুলাই মাসে দেশে ফিরে আসেন।

তিনি জানান, গ্রেপ্তার শাহাদাত বেপারী ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, মাদক কারবারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম করে আসছিল। হত্যাকাণ্ডের পর তিনি কিশোরগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকেন। আত্মগোপনে থেকেই শ্যামলের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সমঝোতার চেষ্টা চালান।

শাহাদাতের নামে মুন্সীগঞ্জের একাধিক থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধে প্রায় ১০টি মামলা রয়েছে বলে জানায় র‌্যাব।

বাহিনীর ভাষ্য, এর আগেও বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন শাহাদাত।

গ্রেপ্তার অন্য দুজনের বিষয়ে বলতে গিয়ে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার মহিউদ্দিন বেপারী শ্যামল হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী শাহাদাত বেপারীর ছেলে। এলাকায় তার নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে তুলে। এই গ্রুপটি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ইভটিজিং ও মাদক কারবারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত।

তিনি বলেন, সম্প্রতি মহিউদ্দিন আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি ঘটনায় কয়েকজনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। তার নামে মুন্সীগঞ্জের একাধিক থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধে প্রায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। তিনিও বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার হায়াতুন শাহাদাতের সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। তিনি শ্যামল হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতের সহযোগী ছিলেন। তার নামে মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর