বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্বাচন দেশে অবশ্যই হবে। তবে সেই নির্বাচন হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। এর আগে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’
সোমবার বগুড়া শহরের সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের একাধিক ইউনিটের অন্তত ২০ হাজার নেতা-কর্মী এতে অংশ নেন।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ এক মহান আন্দোলনে শরিক হয়েছে তরুণেরা। তারেক রহমান সেটা করতে পেরেছেন। তেঁতুলিয়া থেকে রাজশাহীর পদ্মার তীরের তরুণরা এখানে সমবেত হয়েছেন। যে গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। বিপন্ন স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১৭৯১ সালে একটাই চেতনা ছিল- বাংলাদেশক একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা। দেশের সমাজকে গণতান্ত্রিক সমাজে প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্র ধ্বংস করে কয়েকবার একতরফা নির্বাচন করে জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে।
‘এই সরকার রাজনৈতিক কারণে মেধাবীদের চাকরি দিতে পারে না। ব্যবসার কোনো সুযোগ দিতে পারে না। দেশে এখন চার কোটি বেকার। ক্ষমতাসীনরা লুট করে বিদেশে অর্থ পাচার আর বাড়ি বানানো নিয়ে ব্যস্ত। তাদের একটাই লক্ষ্য- লুট করা।’
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) বলে- এতো উন্নয়ন কি তারা দেখতে পায় না? কয়েকটি উড়াল সেতু, ফ্লাইওভার আর টানেল বানালেই উন্নয়ন হয় না। উন্নয়ন বলে সেটাকে যখন আমার দেশের মানুষ দু’বেলা দু’মুঠো খাবার খেতে পারবে, মোটা কাপড়, মোটা চালের ভাত খেতে পারবে।
‘সরকার সেই ব্যবস্থা করেনি। সাধারণ মানুষের চিন্তা করেনি। তারা ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি।’
আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জন্য কী করেছে- এমন প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উত্তরের মানুষের জন্য তিস্তার পানিচুক্তি করতে পারেননি। সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে পারেনি। এই সরকার আমাদের জন্য একটি জিনিস এনেছে, তা হলো ঋণের বোঝা।’
ফখরুল বলেন, ‘দেশে বিদ্যুৎ নাকি ফেরি করে বিক্রি করতে হবে। এখন বিদ্যুৎ কোথায়? আওয়ামী লীগ সব খেয়ে ফেলেছে। এরা যা পায় তাই খায়। দেশ-জাতিকেও খেয়ে ফেলছে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী। সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। বিশেষ বক্তা ছিলেন ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ।
অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস দুলু, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব দুলু, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য দেন।
সমাবেশ পরিচালনায় ছিলেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।