বাগেরহাটে ঘের সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আনারুল ইসলাম (আনা) শেখ নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন।
শনিবার বিকেলে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে বৈটপুর এলাকায় ঘের থেকে ফেরার পথে পিরোজপুর-বাগেরহাট মহাসড়কের বাগেরহাট মেরিন ইনস্টিটিউটের সামনে হামলার স্বীকার হন তিনি। পরে এক ভ্যানচালক আহত আনারুলকে বাড়িতে পৌঁছে দেন।
৫৫ বছর বয়সী আনারুল শেখ বাগেরহাট পৌর শহরের বাসাবাটি এলাকার মৃত আব্দুল গনি শেখের ছেলে। তিনি বাগেরহাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।
নিহতের ভাতিজা মুরাদ শেখ বলেন, ‘ঘের নিয়ে আমার ছোট চাচা বাচ্চু শেখের সঙ্গে কালাম বয়াতী নামের এক ব্যক্তির বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জেরে শনিবার সকালে কালামের আত্মীয় নাগেরবাজার এলাকার রশীদ হাওলাদারের ছেলে সোহেল হাওলাদার ওরফে কালা সোহেল ও তার ভাই রাখা হাওলাদারের নেতৃত্বে ৭-৮ জন আমাদের বাড়িতে এসে ঘেরে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে যায়।
‘দুপুরের কিছু আগে বাচ্চু শেখ বৈটপুর এলাকায় থাকা ঘেরে গিয়ে দেখেন, কালাম ঘের থেকে মাছ ধরছেন। কালামের কাছে মাছ ধরার কারণ জানতে চাইলে, তিনি খারাপ ব্যবহার করেন এবং কালা সোহেলকে ফোন দিয়ে আসতে বলেন। অবস্থা খারাপ বুঝে বাচ্চু শেখ ঘের থেকে চলে আসেন এবং তার ভাই আনারুল শেখকে ফোন করে ঘেরে যেতে বলেন। আনারুল শেখ রিকশা নিয়ে ঘেরে যায়। ঘেরে কাউকে না পেয়ে ঘের থেকে ফিরে আসতে থাকেন। আসার পথে মেরিন ইনস্টিটিউটের সামনে কালা সোহেল, রাখা ও গনেশসহ ৭-৮ জন আমার চাচাকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে ফেলে রেখে যায়। সেখান থেকে এক ভ্যানচালক চাচাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে নিলে চিকৎসকরা তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে আমার চাচা আনারুল শেখ মারা যান।’
আনারুল শেখের ছেলে জিসান শেখ বলেন, ‘যারা আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, আমি তাদের কঠিন বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর মাসুম শেখ বলেন, ‘একজন নিরীহ মানুষকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। যারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে আইনের আওতায় আনতে হবে।’
বাগেরহাট মডেল থানার ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তদন্ত চলছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।’
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।