বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এজেন্ট সংকটে আ.লীগে অস্বস্তি

  •    
  • ১০ জুন, ২০২৩ ১৮:২৪

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে নৌকার প্রার্থী ছাড়া বাকি চার প্রার্থী সব কেন্দ্রের বুথে এজেন্ট দিতে পারছে না। এ নিয়ে অস্বস্তিতে আছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তাদের ভাবনা, নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা কেন্দ্রে অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট না পেলে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পেতে পারেন।

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে সোমবার। তফসিল অনুযায়ী শনিবার মধ্যরাতের পর থেকে প্রার্থীরা আর প্রচার চালাতে পারবেন না। শেষ মুহূর্তে শনিবার প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখর থেকেছে খুলনা শহর।

কেসিসিতে মোট ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ৭৩২টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। এসব কেন্দ্রের ৫৬ শতাংশই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে ৫টি ওয়ার্ডের সব কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

কেসিসি’র এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে তালুকদার আবদুল খালেক, জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মো. শফিকুল ইসলাম মধু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে মো. আব্দুল আউয়াল, জাকের পার্টি থেকে গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে এস এম সাব্বির হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে এস এম শফিকুর রহমান।

২৬ মে প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে মেয়র প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটেছেন। নিজেদের বাক্সে ভোট টানতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে রটিয়েছেন নানা রকমের গালগল্প। শহরের উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাসও দিয়েছেন অহরহ।

তবে ভোটের দিনে সব কেন্দ্রে ভোট কক্ষগুলোতে (বুথ) এজেন্ট দিতে পারছেন না নৌকার প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ছাড়া বাকি চারজন। কারণ রাজনৈতিকভাবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল হওয়ায় অধিকংসংখ্যক কর্মী যোগাড় করা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এই এজেন্ট সংকট নিয়ে অস্বস্তিতে আছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তাদের ভাবনা, নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা কেন্দ্রে অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট না পেলে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পেতে পারেন।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ‘নির্বাচনের দিন বিদেশি বা দেশি পর্যবেক্ষক এসে যদি দেখেন সব বুথে আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্ট আছে, অন্য প্রার্থীদের নেই; তখন তারা বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য বা ধারণা করতে পারেন। অন্য প্রার্থীদের উচিত সব ভোটকক্ষেই এজেন্ট দেয়া।’

তিনি জানান, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্র ও ১ হাজার ৭৩২টি বুথে এজেন্ট দেয়ার জন্য তালিকা করা হয়েছে।

অন্যদিকে সব ভোটকক্ষে পাঠানোর জন্য এজেন্টদের তালিকা করেছে ইসলামী আন্দোলন। তবে শেষ পর্যন্ত দল তাদেরকে বুথগুলোতে পাঠাতে পারবে কিনা তা তারা নিশ্চিত নয়।

দলটির মেয়র প্রার্থী আবদুল আওয়াল বলেন, ‘সব বুথে না পারলেও যত বেশিসংখ্যক বুথে এজেন্ট দেয়া যায় সেই চেষ্টা আমরা করছি।’

জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে পোলিং এজেন্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে সব বুথে এজেন্ট দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ১ হাজার ৭৩২টি বুথের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ২০০ বুথে এজেন্ট দেয়া হবে।

এছাড়া শুধু ভোটকেন্দ্রগুলোতে একজন করে পোলিং এজেন্ট দেয়া হবে জানিয়েছেন জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক।

ঝুঁকিপূর্ণ ৫৬ শতাংশ কেন্দ্র

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ওই তালিকা অনুযায়ী প্রায় ৫৬ শতাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ৫টি ওয়ার্ডের সব কেন্দ্রকে ঝুকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যদিকে ৩টি ওয়ার্ডে সব কেন্দ্রই রয়েছে ঝুঁকির বাইরে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) সূত্রে জানা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশনে ৩১টি ওয়ার্ড রয়েছে। ওই ওয়ার্ডগুলোর আওতায় ভোট কেন্দ্র রয়েছে ২৮৯টি। এবার নির্বাচনে ১৬১টি কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ (ঝুঁকিপূর্ণ) ও ১২৮টি কেন্দ্রকে ‘সাধারণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে কেএমপি।

কেএমপি কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা বলেন, বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ ভোট কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি কেন্দ্রে ৭ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার এবং সাধারণ প্রতিটি কেন্দ্রে ৭ জন পুলিশ ও ১০ জন আনসার মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এর বাইরে ৭১টি মোবাইল পেট্রল টিম, ২০টি অতিরিক্ত মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও প্রতিটি থানায় স্ট্যান্ডবাই ফোর্স থাকবে। নির্বাচনের কাজে মোট ৪ হাজার ৮২০ জন পুলিশ ও ৩ হাজার ৪৬৭ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এর পাশাপাশি বিজিবি ও র‍্যাব সদস্যরা নির্বাচনের দিন মাঠে থাকবেন।

২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেকের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু। নির্বাচনে দুই শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় ওই বছর ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্রও ছিল বেশি। সেবার প্রায় ৮১ শতাংশ কেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।

নির্বাচন ভবন থেকে ভোট পর্যবেক্ষণ

কেসিসি নির্বাচনে এবার ২৮৯টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোটকক্ষ রয়েছে ১ হাজার ৭৩২টি।

নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ও কক্ষে ভোটগ্রহণে কোনো অনিয়ম হচ্ছে কী না তা ঢাকার শেরেবাংলা নগরে নির্বাচন ভবন থেকে পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন। এজন্য প্রতিটি ভোটকক্ষে একটি ও কেন্দ্রের সুবিধাজনক স্থানে দুটি করে সিসি ক্যামরা স্থাপন করা হচ্ছে। মোট ২ হাজার ৩১০টি সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে সব ভোটকেন্দ্র।

নির্বাচন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিসি ক্যামরায় ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পযন্ত সার্বিক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও রেকর্ড রাখা হবে। কোনো কেন্দ্রে বা কক্ষে অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিকভাবে তা দেখা যাবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা তার নিজ কার্যালয়ে বসে ও নির্বাচন কমিশনাররা ঢাকায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে বসে সার্বক্ষণিক ভোটের চিত্র পর্যবেক্ষণ করবেন।

এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। কোনো ধরনের সংঘাত সৃষ্টি হলে তার রেকর্ড ক্যামেরায় থাকবে, যা দেখে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। আর কোনো কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ভোট বন্ধ করে দেয়ার বিধানও রয়েছে।’

কেসিসির এবারের নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মহিলা কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ বিভাগের আরো খবর