বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বয়স্ক ভাতা চাইতে গিয়ে জানলেন তিনি ‘মৃত’

  •    
  • ২৯ মে, ২০২৩ ১৫:৫২

হতদরিদ্র জেলেখা বেগম বলেন, ‘আমার নাকি মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র আছে। কিন্তু আমি তো জীবিত! আমার মতো গরিবের সাথে কেন এমন নয়-ছয় হলো? আমি মেম্বার বাদশাকে কয়েকবার বলেছি- সে কেন আমাকে মৃত দেখাল। কোনো উত্তর পাইনি। আমি এর বিচার চাই। আমার ভাতা যেন বন্ধ না হয় সেই দাবি জানাই।’

বিগত এক বছরে তিনি কয়েকবার বয়স্ক ভাতার টাকা তুলেছেন। সে টাকায় সংসার খরচ ও ওষুধ কিনেছেন। এবার আশপাশের অন্য বয়স্করা মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টের মাধ্যমে টাকা পেলেও তার নামে কোনো টাকা আসেনি। কারণ জানতে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করলে জানানো হয় তিনি মারা গেছেন। তার সেই মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্রও আছে।

ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের বয়স্ক ভাতা সেবাগ্রহীতা জেলেখা বেগমের সঙ্গে। তিনি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সান্ধরাই গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী।

গণমাধ্যমকে এই হতদরিদ্র নারী জানান, বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতার জন্য ইউনিয়ন জুড়ে মাইকিং করা হয়। সে সময় তিনি আবেদন করলে বয়স্ক ভাতার জন্য তার নাম চূড়ান্ত হয়। এক বছর ভাতা পেয়েছেন তিনি বিকাশের মাধ্যমে।

হঠাৎ ভাতার টাকা আসা বন্ধ হলে জেলেখা বেগম উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে যান খোঁজ নিতে। সেখান থেকে তাকে জানানো হয় যে তিনি মারা গেছেন। তাই তার ভাতা বন্ধ করে অন্য একজনকে দেয়া হচ্ছে।

এই বৃদ্ধা বলেন, ‘আমার নাকি মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র আছে। কিন্তু আমি তো জীবিত!

‘আমার মতো গরিবের সাথে কেন এমন নয়-ছয় হলো? আমি মেম্বার বাদশাকে কয়েকবার বলেছি- সে কেন আমাকে মৃত দেখাল। কোনো উত্তর পাইনি। আমি এর বিচার চাই। আমার ভাতা যেন বন্ধ না হয় সেই দাবি জানাই।’

নন্দুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বারী স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্র, যাতে জেলেখা বেগমকে মৃত উল্লেখ করা হয়েছে।

নন্দুয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বারী স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্রে জেলেখা বেগমকে মৃত বলা হয়েছে। ওই প্রত্যয়নপত্রে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বাদশা শনাক্ত স্বাক্ষর করেছেন।

প্রত্যয়নপত্রে চেয়ারম্যান আব্দুল বারী লিখেছেন, ‘আমি জেলেখা বেগমকে চিনি ও জানি। তিনি গত ৭ ডিসেম্বর ২০২১ খ্রীষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেছেন। এজন্য তার বয়স্ক ভাতা বাতিল করে আশরাফ আলী নামে একজনকে যেন বয়স্ক ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় সে সুপারিশ করছি।’

এ বিষয়ে জানতে নন্দুয়ার ইউপি সদস্য মো. বাদশার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন। একইসঙ্গে তিনি তার মোবাইল সেট বন্ধ করে দেন।

ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারীর সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। জানা গেছে, তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।

রাণীশংকৈল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, ‘চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত মৃত্যুর সনদ পেয়ে আমরা বিধি মোতাবেক তার ভাতা বন্ধ করে দিয়েছি। আর সেই ভাতা অন্য একজনকে দেয়া হয়েছে।’

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাঈন কবির স্টীভ বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে ওই বৃদ্ধার ভাতা চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে কী কারণে এমন কাজ হয়েছে, কেন তাকে মৃত দেখানো হয়েছে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শুনানি শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর