বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দলে থাকবেন নাকি নির্বাচন করবেন, জানাবেন মেয়র আরিফ

  •    
  • ২০ মে, ২০২৩ ০৯:০৪

আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি বিএনপি করি। আমার দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। এবার যদি আমাকে নির্বাচন করতে হয়, তবে দল ছাড়তে হবে। দলের আদর্শ থেকে সরে আসতে হবে। আর দল করতে হলে নির্বাচন ত্যাগ করতে হবে। আমি কী করব, সেটি শনিবার জানাব।’

দল ও নির্বাচনের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হবে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে। সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে হলে দল ছাড়তে হবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির এ সদস্যকে। এ নিয়ে দীর্ঘ জল্পনার পর শনিবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন আরিফ।

আজ দুপুরে নগরীর রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশ ডেকেছেন আরিফুল হক চৌধুরী। এ সমাবেশ থেকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

সিলেটে নির্বাচনে মেয়র পদে এ পর্যন্ত ৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। আচরণবিধি ভেঙে তাদের বেশির ভাগই প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন, তবে এদের সবাইকে ছাপিয়ে নগরবাসীর সব কৌতুহল আরিফুল হক চৌধুরীকে ঘিরে। আরিফ নির্বাচন করবেন কি না এ নিয়েই আগ্রহ সবার। আরিফের শনিবারের সমাবেশের দিকে তাকিয়ে অনেকে।

ওই সমাবেশের দুই দিন আগে আরিফের ওপর চাপ আরও বড়িয়ে দিয়েছেন নিজ দলীয় কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে এই নির্বাচনে অংশ না নেয়ার জন্য দলের সব নেতা-কর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

নিজের ওপর কোনো চাপ নেই জানিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি বিএনপি করি। আমার দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। এবার যদি আমাকে নির্বাচন করতে হয়, তবে দল ছাড়তে হবে। দলের আদর্শ থেকে সরে আসতে হবে। আর দল করতে হলে নির্বাচন ত্যাগ করতে হবে। আমি কী করব, সেটি শনিবার জানাব।’

তিনি জানান, শনিবার দুপুর ২টায় রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশ শুরু হবে, তবে বৃষ্টি থাকলে ভেন্যু পরিবর্তন করা হবে।

আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোট হবে। এবারের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি, তবে বিএনপি নেতা আরিফুল হক নাগরিক সমাজের ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন বলে শুরু থেকেই গুঞ্জন রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে আরিফুল হকের বিভিন্ন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে এই গুঞ্জন ও নগরবাসীর কৌতুহল আরও বেড়েছে।

সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগের দিন ২ এপ্রিল হঠাৎ লন্ডন সফরে যান মেয়র আরিফ। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন, তবে তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষেই আরিফ ঘোষণা দেন, এবার প্রার্থী হচ্ছেন না তিনি। আরিফকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান করা হচ্ছে বলেও গুঞ্জন ওঠে সে সময়।

দেশে ফিরে নির্বাচন নিয়ে খোলাসা করে কিছু বলেননি আরিফ। এর মধ্যে ১ মে শ্রমিক দিবসের এক সমাবেশে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে মেয়র আরিফ বলেন, ‘সারা দেশে বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও সিলেটের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সিলেটে আমরা নির্বাচনে যাব। ২০ মে জনসভা করে এ ব্যাপারে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করব।’

আরিফের ওই বক্তব্যে ফের শুরু হয় তোলপাড়। বিশেষত বিএনপির মধ্যে অস্বস্তি দেখা দেয়। আরিফকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নানামুখী তৎপরতাও শুরু করেন বিএনপি নেতারা।

গত ১০ মে সিলেট মহানগর বিএনপির নেতারা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ঢাকায় সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সিলেট মহানগর বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কঠোর নির্দেশনা দেন।

তারেক রহমানের এ নির্দেশনায় আরেক দফা বাধার মুখে পড়তে হয় আরিফুল হক চৌধুরীকে। সেই বাধায় আরিফ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়বেন নাকি বাধা ডিঙিয়ে ভোটে লড়বেন, তা জানা যাবে আজ।

চার হিসাব মেলাচ্ছেন আরিফ

আরিফের ঘনিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দলের আপত্তি সত্ত্বেও নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী। তবে তার আগে চারটি হিসেব মেলাচ্ছেন তিনি। প্রথমত, দলের বিরোধিতা করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে বিএনপির রাজনীতিতে পুনরায় ফিরতে পারবেন কি না। দ্বিতীয়ত, প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে কি না। তৃতীয়ত, বিএনপি নির্বাচনে না আসায় আরিফ বলয়ের দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে অংশ নিতে পারবেন না। নির্বাচনে তারা এজেন্টের দায়িত্বও পালন করতে পারবেন না। এতে ৪২টি ওয়ার্ডের মোট ১৯০টি কেন্দ্রে বিশ্বস্ত এজেন্ট পাওয়া যাবে কি না। এবং চতুর্থত, ইভেএমে ‘সুষ্ঠু’ ভোট হবে কি না।

আরিফের ঘনিষ্ট বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এই চার প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর পেলে প্রার্থী হতে পারেন আরিফ।

তাদের দাবি, দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নেই আরিফের। তাই দলে ভালো পদ পাওয়ার সম্ভাবনা কম তার। অপরদিকে সিলেট নগরে আরিফুল হকের যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে দলটিতে ক্ষোভ রয়েছে। নিজের জনপ্রিয়তা আর আওয়ামী লীগের ক্ষোভকে কাজে লাগাতে পারলে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আরিফের।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২৩ মে এই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৫ মে ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১ জুন।

আগামী ২১ জুন ইভিএমে সিলেট সিটি করপোরেশনে ভোট হবে।

এ বিভাগের আরো খবর