বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার আদায় করে ছাড়ব: রংপুরে ডা. শফিকুর রহমান

  • ইউএনবি   
  • ৪ জুলাই, ২০২৫ ২১:১৭

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কতগুলো মৌলিক সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। আমরা সেই সংস্কারগুলোর কথা বলেছি। আমরা সংস্কারগুলো আদায় করে ছাড়ব। সুষ্ঠু নির্বাচনও ইনশাআল্লাহ আদায় করে ছাড়ব।’

শুক্রবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতের এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব খুনির বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচনসহ ৪ দফা দাবিতে রংপুর মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘কেউ যদি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলের নির্বাচনের স্বপ্ন দেখে থাকেন, আমরা মহান আল্লাহর সাহায্যে সেই স্বপ্নকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করব। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। কোনো প্রশাসনিক ক্যু করতে দেওয়া হবে না।

ভোটকেন্দ্রে কোনো মাস্তানতন্ত্র চলতে দেওয়া হবে না, কালো টাকার কোনো খেলা সহ্য করা হবে না।’ মৌলিক সংস্কার ছাড়া ভালো নির্বাচন সম্ভব নয়, বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই দেশে মব কালচার চলছে। কিন্তু এসব সহিংসতায় জামায়াতের কোনো কর্মী জড়িত নয়। ১৯৭২ সাল থেকেই এই পরিস্থিতি চলছে। জামায়াত সবসময় মব রাজনীতির বিরুদ্ধে।’

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে ডা. শফিকুর বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এজন্য আগে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে, আর সেই পরিবেশ তৈরির জন্যই আমরা মৌলিক সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’

যারা সহিংসতায় জড়িত তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নিজেদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে আনা, এরপর রাষ্ট্রের দায়িত্ব পরিস্থিতি মোকাবিলা করা।

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা বহু ধরনের ষড়যন্ত্রের কথা শুনতে পাচ্ছি, বহু ধরনের কথা ময়দানে শুনতে পাচ্ছি। বহু ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আলামত বুঝতে পারছি। আমরা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেই- এই শেখ হাসিনা, তার হাতে সকল বাহিনী ছিল। দোর্দণ্ড প্রতাপ ছিল, জায়গায় জায়গায় নিজের লোক বসিয়েছিল। মান্তানদের দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছিল। কিন্তু যখন জনগণের জাগরণ, জনগণের বিস্ফোরণ হয়েছে, তখন তাকে কেউ রক্ষা করতে পারেনি।

জামায়াতপ্রধান বলেন, যেই জনগণ এতো মূল্য দিয়ে একটা পরিবর্তন এনেছে, সেই জনগণ আরেকটা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে দেবে না ইনশাআল্লাহ।

জামায়াতের আমির বলেন, আমরা কথা দিচ্ছি ফ্যাসিবাদবিরোধী এই লড়াই ততদিন চলবে, যতদিন দেশে ফ্যাসিবাদের সামান্য চিহ্নও থাকবে। ফ্যাসিবাদেকে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত আমাদের লড়াই কেউ থামাতে পারবে না।

জনসভার প্রধান বক্তা এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, আমি আজ মুক্তভাবে কথা বলতে পারছি। কিছুদিন আগেও আমি কারাগারে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। আল্লাহ যে আমাকে ফাঁসির মঞ্চ থেকে জনতার মঞ্চে নিয়ে আসবে, এটা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানত না। আজকে আমি ফাঁসির মঞ্চ থেকে লাখো জনতার মঞ্চে হাজির হয়েছি। সবই আল্লাহর মেহেরবানি, রহমত। যে গলায় আমার রশি পরানোর কথা ছিল, সেই গলায় ফুলের মালা পরানো হলো। আল্লাহ আমাকে মুক্ত করেছেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডিত হয়ে ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম। তবে ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

জনসভায় বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য দেন জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, শহিদ আবু সাঈদের বাবা ও বড়ভাই রমজান আলীসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রংপুর মহানগরের আমির এটিএম আজম খান।

জনসভা থেকে আগামী নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম।

এ বিভাগের আরো খবর