বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সমকামিতার প্রস্তাব দিয়ে অপহরণ হত্যা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৮ মে, ২০২৩ ১৩:৪৯

ডিসি মোর্শেদ আলম বলেন, অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা অত্যন্ত দুর্ধর্ষ ও চতুর। তাদের শনাক্ত করতে বেশ কয়েকবার কৌশল পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তী সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের সদস্য আশরাফুল ইসলামকে সাভারের জিরাবো এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যে রাসেল সরদার ও তৌহিদুল ইসলাম বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে বিভিন্ন মেসেঞ্জার গ্রুপে সমকামী তরুণদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলত একটি চক্র। এরপর আগ্রহী তরুণদের সমকামিতার প্রস্তাব দিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় এনে জিম্মি করে টাকা-পয়সা আদায় করে ছেড়ে দিতেন চক্রের সদস্যরা।

২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে এই চক্রের ডাকে ঢাকায় আসেন আমির হোসেন। এরপর চক্রের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে অপহৃত হন। পরবর্তী সময়ে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলেও টাকা না পেয়ে আমিরকে হত্যা করে লাশ গুম করে চক্রটি।

নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপ থেকে বুধবার চক্রের হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির দক্ষিণখান থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন চক্রের হোতা মো. তারেক ওরফে তারেক আহাম্মেদ, মোহাম্মদ হৃদয় আলী, আশরফুল ইসলাম, রাসেল সরদার ও তৌহিদুল ইসলাম বাবু।

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম।

তিনি বলেন, ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার কথা বলে ঢাকা আসেন। এরপর ২২ ডিসেম্বর দক্ষিণখান থানার আশকোনা মেডিক্যাল রোডে আমিরের বড় বোন নুরনাহার বেগমের বাসায় ওঠেন। ২৮ ডিসেম্বর আমিরের ছোট বোন কামরুন্নাহারকে তার ভাইয়ের মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি।

উপকমিশনার আরও বলেন, এই ঘটনায় আমিরের বড় ভাই বিল্লাল হোসেন দক্ষিণখান থানায় ওই দিনই সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির পর থেকে অপহৃত আমিরকে উদ্ধারে অভিযান চালায় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল বিল্লাল থানায় অপহরণ মামলা করেন।

ডিসি মোর্শেদ আলম বলেন, অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা অত্যন্ত দুর্ধর্ষ ও চতুর। তাদের শনাক্ত করতে বেশ কয়েকবার কৌশল পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তী সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের সদস্য আশরাফুল ইসলামকে সাভারের জিরাবো এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যে রাসেল সরদার ও তৌহিদুল ইসলাম বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, ‘তিনজন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে চক্রের হোতা তারেক আহাম্মেদ ও তার সহযোগী মোহাম্মদ হৃদয় আলীর অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর গতকাল দক্ষিণখান থানার একটি দল নোয়াখালীর দুর্গম হাতিয়া দ্বীপে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।’

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার তারেকের দেয়া তথ্যানুযায়ী গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার একটি বাড়ির পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে অপহৃত আমিরের হাত-পা বাঁধা পলিথিনে মোড়ানো গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

যেভাবে হত্যা

আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি মোর্শেদ আলম জানান, গ্রেপ্তার চক্রের হোতা তারেকের ‘কষ্টের জীবন’ নামের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি ছিল। এই আইডি দিয়ে বিভিন্ন সময় ফেসবুক মেসেঞ্জারে বিভিন্ন ব্যক্তিকে সমকামিতার প্রস্তাব দিতেন তিনি। যারা তার প্রস্তাবে রাজি হতেন, তাদের গাজীপুর চৌরাস্তা, শ্রীপুর, মাওনাসহ বিভিন্ন এলাকায় ডেকে আনা হতো। এরপর মোবাইল, টাকা-পয়সা কেড়ে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দেয়া হতো ডেকে আনা ব্যক্তিদের।

পুলিশ জানায়, একই কায়দায় আমিরকে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে গাজীপুর চৌরাস্তায় ডেকে নেয়া হয়। আমির তার বোনের বাসা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তায় গেলে চক্রের সদস্যরা তাকে জিম্মি করে ফেলেন। এরপর বোনের কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। প্রত্যাশিত মুক্তিপণ না পেয়ে ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর আমিরকে হত্যা করা হয়। এরপর বস্তায় লাশ ভরে বাসার পেছনে পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর