চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড়ে চলন্ত রিকশার ওপর বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া রিকশাচালক জাহেদুলের পরিবারকে ৫ লাখ টাকার এফডিআর (স্থায়ী আমানত) করে দেয়া হবে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিদ্যুৎ সচিব ও পিডিবির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, “সকালে আমি প্রতিমন্ত্রী সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি। বলেছি যে, মারা যাওয়া রিকশাচালকের তো ৭ মাসের একটা বাচ্চা আছে। পরিবারটিকে কোনো আর্থিক সহায়তা দেয়া যায় কিনা।
“ওনি আমার কাছ থেকে বিস্তারিত জানলেন। জিজ্ঞেস করলেন যে এটা কাদের, পিডিবির কিনা। লাইনটা পিডিবির জানার পর ওনি বললেন, ‘আমি পিডিবির চেয়ারম্যানকে বলে দেব ৫ লাখ টাকার এফডিআর করে দেয়ার জন্য।’ ওনি আমাকে পিডিবি চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ সচিব সাহেবের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বললেন।”
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমি বিদ্যুৎ সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি৷ পিডিবির চেয়ারম্যান সাহেব মিটিংয়ে থাকায় ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি এখনও। বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান মহোদয় বললেন যে নিহত রিকশাচালকের পরিবারে উপযুক্ত কেউ থাকলে একটি চাকরির ব্যবস্থা করবেন।’
দুর্ঘটনায় নিহত ওই রিকশাচালকের পরিবারকে দাফন-কাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
এর আগে রোববার সকালে নগরীর অক্সিজেন মোড়ে হাজি ওয়াজেদ পেট্রোল পাম্পের দিক থেকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দিকে রিকশা চালিয়ে যাওয়া পথে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে জাহেদুলের ওপর। একে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দগ্ধ হন তিনি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে তিনি মারা যান।
অক্সিজেন এলাকায় ছিঁড়ে পড়া ওই তার পিডিবির। নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে ন্যূনতম ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন পিডিবি চট্টগ্রাম শাখার প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম।
সোমবার তিনি বলেন, ‘আমরা এখান থেকে (চট্টগ্রাম কার্যালয়) একটা আর্থিক ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু যেহেতু এখন একটা হ্যান্ডসাম অ্যামাউন্টের বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি, তাই আর এগুচ্ছি না।’
এদিকে রিকশাচালক জাহেদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় শুরুতে আইনি ঝামেলা এড়াতে মামলা না করার কথা বললেও পরবর্তীতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় নিহতের পরিবার।
নিহতের স্ত্রী উম্মে কুলসুমের চাচা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুরুতে পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) ও আইনি ঝামেলায় জড়ানোর ভয়ে মামলা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু ওর বিয়ে হয়েছে মাত্র দেড়-দুই বছর। বাচ্চাটাও ছোট। ওদের কীভাবে চলবে? তাই আমরা মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ আগামীকাল (বুধবার) আমার বড় ভাই (নিহতের শ্বশুর আয়ুব আলী) আর ভাবি চট্টগ্রামে যাবে। তারা মামলা করবে।’