জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা খান ওরফে জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২১ মে দিন ঠিক করেছে আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন কোনো সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিতে না আসায় দুদক সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করে। সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে বিচারক নতুন দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল একই আদালত তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা খান ওরফে জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
এর আগে বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় থেকে গত ৩০ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে গেজেট প্রকাশের আদেশ দেয় একই আদালত।
গত বছরের ১ নভেম্বর তারেক-জুবাইদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। একই আদালত ৫ জানুয়ারি তাদের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেয়।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কাফরুল থানায় তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান ও তারেকের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে এই মামলা করে দুদক।
এতে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়। মামলায় তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জুবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে।
দুদক এই মামলা করার পর একই বছর তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমান মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আলাদা রিট করেন। এর মধ্যে ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ এই মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
এরপর আসামিরা মামলা বাতিলের আবেদন করলে হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দেয়। দীর্ঘ বিরতির পর রিট মামলাগুলো গত ১৯ এপ্রিল কার্যতালিকায় আসে।
এ মামলার বৈধতা নিয়ে আরেকটি ফৌজদারি আবেদন করেছিলেন জুবাইদা। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তখন এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করে হাইকোর্ট। সেই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলে জারি করা রুল খারিজ হয়ে যায়।
বিদেশে অর্থপাচার মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ১০ বছরের সাজা ও ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটূক্তির মামলায় তারেক রহমানের দুই বছরের সাজা হয়েছে।
২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তারের পরের বছর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে গিয়ে আর ফেরেননি বিএনপির এই নেতা। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার রাতে তারেককে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে বিএনপি।
তারেকের মতো জুবাইদাও যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তিনি সরকারি চিকিৎসক ছিলেন। দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে তাকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।