বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঝুঁকিপূর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চান না জালিয়াপাড়ার বাসিন্দারা

  • রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার) থেকে   
  • ১৩ মে, ২০২৩ ১১:৫৮

জালিয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফরিদুল আলম বলেন, ‘সাইক্লোন শেল্টারের একাংশ নাফ নদীর পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। কিছুটা মেরামতও হয়েছে, কিন্তু এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে পানি যদি বেড়ে যায়, তাহলে ঝুঁকি আছে। মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ বলে আশ্রয় নিতে চাচ্ছে না। বাকিটা আল্লাহ ভরসা।’

বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে রোববার দুপুরের মধ্যে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। এর আগে একমাত্র আশ্রয়কেন্দ্রটিতে যেতে সাহস পাচ্ছেন না কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দারা।

নাফ নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারটি, কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রটি রয়েছে উপজেলা প্রশাসনের তালিকায়।

জালিয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফরিদুল আলম বলেন, ‘সাইক্লোন শেল্টারের একাংশ নাফ নদীর পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। কিছুটা মেরামতও হয়েছে, কিন্তু এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে পানি যদি বেড়ে যায়, তাহলে ঝুঁকি আছে।

‘মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ বলে আশ্রয় নিতে চাচ্ছে না। বাকিটা আল্লাহ ভরসা।’

সাবরাং ইউনিয়নের আওতাধীন জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নাফ নদীর তীরে। গত বছর বর্ষাকালে নাফ নদীর ভাঙনে জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারের একাংশ ভেঙে পড়ে। বর্ষাকালে নাফ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যালয়ের একটি পানির ট্যাংক ও নলকূপ নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

ভবনটির বেজমেন্টের নিচের মাটি সরে গিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে নাফ নদীতে চলে যেতে পারে এটি।

বর্তমানে এই ভবনে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। বিদ্যালয়ের ভবন বিলীন হয়ে গেলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এসব শিক্ষার্থীর জীবন।

১৯৯১ সালে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সারা দেশে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা যাওয়ার পর এই অঞ্চলের মানুষের আশ্রয়ের জন্য ১৯৯৩ সালে সৌদি আর্থিক অনুদানে তিন তলা বিশিষ্ট সাইক্লোন শেল্টারটি নির্মাণ করে বাংলাদেশ সরকার।

এই বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ইয়াছিন নামের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্র বলে, ‘আমাদের এলাকার একটি মাত্র বিদ্যালয়। তিন কিলোমিটার এলাকজুড়ে আর কোনো বিদ্যালয় নেই। এই বিদ্যালয়টি নদীর বুকে বিলীন হয়ে গেলে আমাদের পড়ালেখার ব্যাঘাত ঘটবে।

‘পড়ালেখা করতে হলে তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা হেঁটে অন্য এলাকার বিদ্যালয়ে গিয়ে পড়তে হবে। আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কেউ এ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিতে চাই না।’

টেকনাফ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গৌর চন্দ্র দে জানান, ঘূর্ণিঝড়ের খবরে স্কুলগুলোর তালিকা করে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, তবে এরই মধ্যে যেসব ভবন জরাজীর্ণ হয়ে গেছে, সেখানে বিকল্প ব্যবস্থা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক ঝুঁকিপূর্ণ, সেটি আমার জানা নেই।’

সাবরাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুস সালাম বলেন, ‘শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক কাম সাইক্লোন শেল্টারের একাংশ এক বছর আগে নাফ নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীর পশ্চিম পাড়ে একটি গ্রাম ভেঙে নতুন বসতি হয়েছে। সেখানে ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষের বসতি, কিন্তু কোনো পাকা বিদ্যালয় কিংবা সাইক্লোন শেল্টার নেই।

‘এ বিদ্যালয় এখন সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ। ওই বসতিতে থাকা একমাত্র উত্তরে একটি মাদ্রাসা টিনের ঘর রয়েছে। মানুষ সেখানে আশ্রয় নেবে। এখানে ঝড় এলে আশ্রয় নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই অতি শিগগিরই কোনো একটা ব্যবস্থা করলে ভালো হয়।’

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘গোটা উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় এখানে সাইক্লোন শেল্টার কম। শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু শিক্ষা অফিসার আমাকে আশ্রয় নেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন। পরে জানলাম এটা ঝুঁকিপূর্ণ।’

এ বিভাগের আরো খবর