কুমিল্লার দাউদকান্দিতে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে র্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন মোট ৬ আসামি। এ ছাড়া যে তিনজন জামালকে গুলি করেছিলেন, তারা পালিয়ে দেশের বাইরে চলে গেছেন।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান এসব তথ্য দেন। গ্রেপ্তারের পর হত্যায় ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, বোরকা ও হিজাব উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন তিতাস উপজেলার জিয়ার কান্দি গ্রামের ৩৩ বছর বয়সী মো. রবি, ৩৪ বছর বয়সী মো. শাহপরান ও একই উপজেলার লালপুর গ্রামের ২৭ বছরের সুমন হোসেন।
গত কয়েক দিনের অভিযানে তাদের ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান।
তিনি জানান, এদের মধ্যে মাইক্রোবাস চালক সুমন ঘটনার পর পরই আসামিদের নিয়ে পালিয়ে যান। তাকে ঢাকার মদনপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি রবি ও শাহপরান শুটারদের আত্মগোপনে থাকার বিষয়ে সহযোগিতা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, ‘যাদের গুলিতে যুবলীগ নেতা মনির হোসেন নিহত হয়েছেন, সেই তিনজন বিদেশে পালিয়ে গেছেন। দীর্ঘ পরিকল্পনার পর মনির হোসেনকে খুন করেন ঘাতকরা। খুনের আগে একাধিকবার বোরকা পরে ট্রায়াল দেন তারা।’
এই পরিকল্পনার সঙ্গে কজন জড়িত- এমন প্রশ্নে আবদুল মান্নান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সঠিক কোনো সংখ্যা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে খুনের ঘটনার দিন একেকজন একেক রকম ভূমিকা পালন করেন।’
একই কথা বলেছেন র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মোহাম্মদ পাশাও।
কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরিপুর বাজারে গত ৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন খুন হন। তিনজন বোরকা পরে এসে তাকে গুলি করে হত্যা করেন।
নিহত জামাল হোসেন তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিতাস উপজেলায় বাড়ি হলেও তিনি ব্যবসায়িক সূত্রে পাশের দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর বাজারের পাশে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
রাজনৈতিক ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে ওই হত্যাকাণ্ড হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের কর্মকর্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন ও গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ বড়ুয়া।