বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাবেক স্ত্রীর তথ্যে ধরা অপহরণকারী চক্রের হোতা

ডিসি মোর্শেদ আলম বলেন, ‘চক্রের হোতা মাসুদ ও তার সহযোগী শাহীনুর ছয় থেকে সাত বছর ধরে ৫০০ থেকে ৬০০ শিশুকে অপহরণ করেছেন। টার্গেট করা শিশুকে তার বাবা-মায়ের বন্ধু কিংবা ব্যবসায়িক পার্টনার পরিচয়ে কথা বলার একপর্যায়ে তাদের মা-বাবার আর্থিক অবস্থা কৌশলে জেনে নিতেন চক্রের সদস্যরা। এরপর শিশুর মা-বাবা টাকা পাবেন বলে কল করতে বলা হতো তাদের কাছে। সেই কৌশলে মোবাইল নম্বর নিয়ে শিশুটির মা-বাবাকে ফোন করে সন্তান অপহরণ হয়েছে জানিয়ে টাকা দাবি করতেন তারা।’

অপহরণের পর নির্যাতন করে টাকা আদায় করাই অপহরণকারীরা প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু এই চক্রটি অপহৃতদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে। ভুক্তভোগী পরিবারের সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করে দাবি করা হয় মুক্তিপণ।

পাঁচ শ টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে অপহৃতদের ছেড়ে দেন তারা। আবার কখনও টাকা না নিয়েও একদিন পর ছেড়ে দেয়ার উদাহরণ আছে। এভাবে পাঁচ শতাধিক অপহরণ করেছে চক্রটি।

এই চক্রের হোতা মিল্টন মাসুদের সাবেক স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রেশন করা মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে মাসুদসহ শাহীনুর রহমান ও সুফিয়া বেগম নামের আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রাজধানীর উত্তরা বিমানবন্দর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে উত্তরা পূর্ব থানার একটি টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের গ্রেপ্তার করে।

নিউজবাংলাকে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা মোবাইল নম্বর দিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে সেটি আবার বন্ধ করে রাখতেন মাসুদ। চারটি বিয়ে করলেও এখন এক স্ত্রীর সঙ্গেই আছেন তিনি।’

তার বিরুদ্ধে আগেই পাঁচটি অপহরণ মামলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাসুদ মাদকসেবী। তার কাজই হচ্ছে কৌশলে শিশুদের অপহরণ করা।’

এডিসি বলেন, ‘শুধু ভিকটিমের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য মাসুদের ৭-৮টি সিম ছিল। ভিকটিম ছাড়া তিনি তার এই নম্বরগুলো দিয়ে অন্য কাউকে ফোন দিতেন না।

‘ওই সিমগুলোর একটি সাবেক এক স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রেশন করা। এটাই আমাদের মাসুদকে গ্রেপ্তার করতে সাহায্য করেছে।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভিকটিমের পরিবারকে ফোন দেয়ার পর নম্বর বন্ধ থাকার কারণে আমরা তাকে ধরতে পারছিলাম না। পরে এক ভিকটিমের পরিবারকে তিনি একটি নম্বর থেকে ফোন দেন। পরে আমরা আরও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার সাবেক এক স্ত্রীর নম্বর শনাক্ত করি।

‘তখন ওই নারীর বাসা তল্লাশি ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা নিশ্চিত হই মাসুদ তার সাবেক স্ত্রী। পরে ওই নারীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা মাসুদকে গ্রেপ্তার করি।’

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম বলেন, ‘২৪ মার্চ রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের হলি ল্যাবের সামনে থেকে ৬ বছরের শিশু শাহিন শেখ হারিয়ে গেলে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি জিডি করা হয়। এর সূত্র ধরে প্রথমে অপহরণকারী চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়।

‘চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে স্কুল, বাজার, রেস্তোরাঁসহ নানা জায়গায় একা থাকা ও বাবা মায়ের সঙ্গে ঘুরতে বেরোনো শিশুদের টার্গেট করে কৌশলে অপহরণপূর্বক তাদের পরিবারের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল।’

তিনি বলেন, ‘চক্রের হোতা মাসুদ ও তার সহযোগী শাহীনুর ছয় থেকে সাত বছর ধরে ৫০০ থেকে ৬০০ শিশুকে অপহরণ করেছেন। টার্গেট করা শিশুকে তার বাবা-মায়ের বন্ধু কিংবা ব্যবসায়িক পার্টনার পরিচয়ে কথা বলার একপর্যায়ে তাদের মা-বাবার আর্থিক অবস্থা কৌশলে জেনে নিতেন চক্রের সদস্যরা। এরপর শিশুর মা-বাবা টাকা পাবেন বলে কল করতে বলা হতো তাদের কাছে। সেই কৌশলে মোবাইল নম্বর নিয়ে শিশুটির মা-বাবাকে ফোন করে সন্তান অপহরণ হয়েছে জানিয়ে টাকা দাবি করতেন তারা।’

ডিসি মোর্শেদ বলেন, ‘বাবা-মা ভয়ে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা দিতেন অপহরণকারীদের। টাকা দেয়ার কিছু সময় পরে দেখা যায়, অপহৃত শিশুটি বাসায় ফিরে এসেছে। কোনো বাবা-মা যদি টাকা নাও দিতে পারেন, তবুও তাদের সন্তান ফেরত চলে এসেছে বলেও জানা গেছে।

অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ডিএমপির এ কর্মকর্তা।

এ বিভাগের আরো খবর