আপিল করেও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থিতা পেলেন না সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম। তার আবেদন নামঞ্জুর করে রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশ বহাল রেখেছে নির্বাচন কমিশনের আপিল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিভাগীয় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে জাহাঙ্গীর আলমের আপিলের শুনানি হয়। শুনানি শেষে ঢাকা বিভাগীয় নির্বাচন কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম আবেদনটি নামঞ্জুর করেন।
শুনানিতে অংশ নেয়া গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতিনিধি (মিডিয়া) মঞ্জুর হোসেন খান বলেন, গত মঙ্গলবার মনোনয়ন বাছাইয়ে বাদ পড়া মোট সাত প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করেন। এর মধ্যে মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ৫ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন।
মঞ্জুর হোসেন জানান, আপিলের শুনানিতে দুজন আইনজীবীসহ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে তারা পুনঃতফসিলিকরণের জন্য টাকা জমা দেয়া এবং জামিনদার খেলাপি হয় না বলে দাবি করেন। কিন্তু শুনানিতে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি জানান, আপিলকারীরা ব্যাংকের আইন অনুযায়ী এখনো ঋণখেলাপি। জাহাঙ্গীর আলম যে প্রতিষ্ঠানের ঋণের জামিনদার সে ঋণ এখনো পুনঃতফসিলিকরণ হয়নি। এসময় ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্য প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমাদানের সময় ঋণখেলাপি ছিলেন। তাই পরে টাকা জমা দিলেও তারা খেলাপি।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশ বহাল রাখেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর সিটির বিগত নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হওয়া জাহাঙ্গীর বঙ্গবন্ধু ও দলকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে ২০২১ সালের নভেম্বরে বহিষ্কৃত হন। পরে মেয়র পদও হারান গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের এ বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক। তবে এ বছরের জানুয়ারিতে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলার শর্তে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে আওয়ামী লীগ।
এর মধ্যে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে আওয়ামী লীগ মেয়র পদে মনোনয়ন দেয় অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে। তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। অন্যদিকে দলের মনোনয়ন না পেয়ে জাহাঙ্গীর আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র কেনেন। পাশাপাশি মা জায়েদা খাতুনের নামেও মনোনয়নপত্র নেন তিনি।
ঋণখেলাপির জামিনদার হওয়ার কারণে গত ৩০ এপ্রিল জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। তবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।