বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিলেট সিটি নির্বাচন: আরিফসহ চারজনের প্রার্থিতা নিয়ে ধোঁয়াশা

  •    
  • ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ ১৪:১৫

আরিফ প্রার্থী না হলে জামান ও আলাওর এবং আরিফ প্রার্থী হলে বদরুজ্জামান সেলিমও প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। যদিও এই তিন নেতা এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি। সময় হলে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলছেন তারা।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবারও প্রার্থী হবেন কি না, তা নিয়ে কাটেনি ধোঁয়াশা। নিজের অবস্থান খোলাসা না করে এখনও সবাইকে অপেক্ষায় রেখেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির এই নেতা। তার মতো অবস্থা সম্ভাব্য আরও তিন প্রার্থীর।

তারা হলেন বিএনপির সাবেক সহস্বেচ্ছাসেবাবিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামান জামান, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর ও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম।

এদের মধ্যে আরিফ প্রার্থী না হলে জামান ও আলাওর এবং আরিফ প্রার্থী হলে বদরুজ্জামান সেলিমও প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। যদিও এই তিন নেতা এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি। সময় হলে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলছেন তারা।

আরিফুল হক চৌধুরীর দল বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে সফরে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার ইঙ্গিত দেন আরিফ, তবে ১৬ এপ্রিল আগে যুক্তরাজ্য থেকে ফিরে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া আরিফের বক্তব্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার আভাস মিলেছে।

ওই দিন আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, তবে আমি এই জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার বিষয়ে অবহিত আছি। তাদের প্রত্যাশার মূল্যায়ন করব।’

আরিফের এমন বক্তব্যের পর থেকেই তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে আলাচনা শুরু হয়। যদিও এমন গুঞ্জন চলছে দীর্ঘদিন থেকেই।

এ ব্যাপারে বুধবার আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমার দল বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের এই সিদ্ধান্ত যৌক্তিক, তবে দলের মতো এই নগরের ভোটাররাও আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে তারা আমাকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন।

‘তাই নগরের বাসিন্দাদের মনোভাবও বোঝার চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি। এ জন্য কিছুটা দেরি হচ্ছে, তবে দ্রুতই আমি আমার সিদ্ধান্ত জানাব।’

আরিফের মতো বিএনপি ও আওয়ামী লীগের তিন নেতার প্রার্থিতা নিয়ে রয়েছে অস্পষ্টতা।

এই তিন নেতার ঘনিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলে সামসুজ্জামান জামান ও ফয়জুল আনোয়ার আলাওর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। অন্যদিকে আরিফুল নির্বাচনে অংশ নিলে বদরুজ্জামানও অংশ নিতে চান।

সুস্পষ্ট করে প্রার্থিতার ঘোষণা না দিলেও আলাওর নগরে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টারিং করেন। জামান বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে তৎপর। আর সেলিম বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও নিজের ঘনিষ্টদের কাছে প্রার্থিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

ওই সূত্রের ভাষ্য, বিশেষত আরিফকে ‘ঠেকাতে’ প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়েছেন সেলিম।

সিলেটে বিএনপির রাজনীতিতে আরিফ ও সেলিমের বিরোধ দীর্ঘদিনের। গত নির্বাচনেও বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন সেলিম। দল আরিফকে মনোনয়ন দিলে সেলিম স্বতন্ত্র প্রার্থী হন, তবে শেষ মুহূর্তে দলের উচ্চ পর্যায়ের মধ্যস্থতায় আরিফকে সমর্থন জানান সেলিম।

এই তিনজনের মধ্যে বদরুজ্জামান সেলিম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। চলতি বছরে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন তিনি। সিলেট বিএনপিতে তার একটি নিজস্ব বলয় রয়েছে।

প্রার্থিতার বিষয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বদরুজ্জামান সেলিম হোয়াটসঅ্যাপে বলেন, ‘এই সরকারের আমলে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না। তাই বিএনপি এ নির্বাচনে যাবে না, তবে দলের কেউ যদি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেন তাহলে আমাকেও নতুন করে ভাবতে হবে।

‘কারণ প্রার্থী হওয়ার জন্য আমাকে অনেকেই চাপ দিচ্ছেন। শিগগিরই দেশে এসে আমি নিজের সিদ্ধান্ত জানাব।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহস্বেচ্ছাসেবাবিষয়ক সম্পাদকের পদে থাকা সামসুজ্জামান জামান সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগ তুলে ২০২১ সালে দল থেকে পদত্যাগ করেন, তবে দলে না থাকলেও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনে জামানের অনেক অনুসারী রয়েছেন, সিলেটের রাজনীতিতে যারা ‘জামান গ্রুপ’ নামে পরিচিত।

বিএনপি থেকে পদত্যাগের পর নিজের অনুসারীদের নিয়ে সামাজিক সংগঠন গড়ে নানা কর্মকাণ্ডে সক্রিয় রয়েছেন জামান। গত রমজান মাসেও তার তৎপরতা দেখা যায়। এর আগে ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জামান বিএনপির বিদ্রোর্থী প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃতীয় হন। এবার আরিফুল হক প্রার্থী না হলে জামান প্রার্থী হতে পারেন বলে তার অনুসারীরা জানিয়েছেন।

প্রার্থিতা প্রসঙ্গে সামসুজ্জামান জামান বলেন, ‘নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য বিভিন্ন সেক্টরের লোকজন চাপ দিচ্ছেন। আমিও এ নিয়ে ভাবছি, তবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকও তিনি। ঈদের আগে নগরজুড়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার সাঁটিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। আরিফুল প্রার্থী না হলে তিনি আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

এ বিষয়ে ফয়জুল আনোয়ার আলাওর বলেন, ‘সিলেটের রাজনীতিতে সক্রিয় একজনকেই সবাই প্রার্থী হিসেবে চাচ্ছেন। অনেকেই আমাকে প্রার্থী হতে বলছেন, তবে আমি এখনও এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।’

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

এর আগে ২০১৩ ও ২০১৮ সালে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল হক চৌধুরী। দুইবারই তার কাছে পরাজিত হন সিলেটের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনে ইভিএমে ভোট হবে। ২৩ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১ জুন।

২০০২ সালে সিলেট পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করা হয়। এই মহানগরের আয়তন ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার; ওয়ার্ড ৪২টি।

সিটি করপোরেশন হওয়ার পর এবার পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন হতে যাচ্ছে সিলেটে।

এ বিভাগের আরো খবর