বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জামাতার দোকান পোড়ায় অঝোরে কাঁদলেন শ্বশুর

  •    
  • ১৫ এপ্রিল, ২০২৩ ১৫:০৬

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মফিজুল জানান, ঈদের আগে তার জামাতা সোহাগ প্রায় দেড় কোটি টাকার মাল দোকানে তুলেছিলেন। তার সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

রাজধানীর নিউ মার্কেটের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শাহনেওয়াজ হলের এক কোনায় বসে অঝোরে কাঁদছিলেন মফিজুল ইসলাম। কাছাকাছি নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় তার জামাতা মোহাম্মদ সোহাগের দুটি দোকান ছিল।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মফিজুল জানান, ঈদের আগে সোহাগ প্রায় দেড় কোটি টাকার মাল দোকানে তুলেছিলেন। তার সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগেই তার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন সোহাগের সঙ্গে। এখন মেয়ের সংসার কীভাবে চলবে, সেটি ভেবে পাচ্ছেন না।

নিউ মার্কেটের পাশে বিশ্বাস বিল্ডার্সের নিউ মার্কেট সিটি কমপ্লেক্সের নিচে দুই বস্তা কাপড়ের ওপর বসে কাঁদতে দেখা যায় নিউ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী সবুজ মিয়াকে। তিনি জানান, ঈদ উপলক্ষে দোকানে ৪০ লাখ টাকার মাল তুলেছিলেন। এখন আগুনে পুড়ে সব শেষ। আগুনের মধ্যেই মাত্র দুই বস্তা মাল বাঁচাতে পেরেছেন তিনি।

কাঁদতে কাঁদতে সবুজ মিয়া বলেন, ‘এই ঈদে আমি এখনও নিজের বউ-বাচ্চার জন্য কেনাকাটা করিনি। ভাবছিলাম ২-১ দিনের মধ্যে কিনব, কিন্তু আমি এখন নিঃস্ব। এই ২ বস্তা কাপড় ছাড়া আমার আর কিছুই নেই।

‘পোলাপানের কাপড় কি কিনব? বাসা ভাড়া কীভাবে দিব, তাই ভেবে পাচ্ছি না। তা ছাড়া দোকানে মাল তুলতে কিছুটা ঋণও করেছি। এখন মরণ ছাড়া আমার আর কোনো পথ নেই। কারণ পরিবারের সবাই অনেক আশা করে বসে আছে ঈদে কেনাকাটা করে গ্রামের বাড়ি যাবে। এখন আমি তাদের কি জবাব দেব, বলেন ভাই?’

নিউ মার্কেটের এক নম্বর গেটের পাশে বসে কাঁদছিলেন ফারুক মুন্সি। নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলার ২৮৬ নম্বর ‘ফারহানা ব্লক এন্ড ফ্রেব্রিক্স’ নামের দোকানের মালিক তিনি।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘রোজার আগে গ্রামের জমি বেচে ১২ লাখ টাকার মাল তুলেছিলাম, সব মিলিয়ে দোকানে ৭০-৮০ লাখ টাকার মাল ছিল। এখন সব পুড়ে শেষ। এ ছাড়া গতকাল শুক্রবার দোকানে বেচাকেনা করছি ৫ লাখ টাকার ওপরে। সে টাকাও দোকানের ক্যাশে ছিল। তাও পুড়ে শেষ। এখন আমার সব শেষ।’

চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে সিঁড়িতে কয়েক বস্তা মালামাল নিয়ে বসে ছিলেন লিয়াকত নামের আরেক ব্যবসায়ী। নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় তার কাপড়ের দোকান।

তার ভাষ্য, দোকানে প্রায় ৬০ লাখ টাকার মালামাল ছিল। এখন ২ লাখ টাকার মাল বাচাতে পেরেছেন তিনি।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেছে। এখন এই দুই বস্তার মাল রাস্তার সামনে চৌকিতে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। তাও যে মাল আছে, সে মাল আগুনে অনেকটা পোড়া। তাই তাও বিক্রি হবে হবে বলে মনে হয় না। এখন আল্লাহ জানে কীভাবে বাঁচব।’

নিউ মার্কেটের আশপাশে মফিজুল ইসলাম, লিয়াকতের মতো এই রকম অনেক মানুষের কান্না দেখা যায়। তাদের কেউ কেউ কয়েক বস্তা মালামাল বাঁচিয়েছেন। কেউ আবার সব হারিয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর