২৫০ শয্যার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পুরনো ভবনের ছাদ থেকে পলেস্তরা খসে পড়ে এক রোগীর স্ত্রীর মাথা ফেটে গেছে। তার মাথায় ছয়টি সেলাই দেয়া হয়েছে। স্বামীর সেবা করতে এসে তিনিও এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও গণপূর্ত বিভাগ পরস্পরের ওপর দায় চাপাচ্ছে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ নম্বর এসি কেবিনে এ ঘটনা ঘটে। ওই কেবিনে চিকিৎসা নিচ্ছেন হৃদরোগী রিপন আলী।
তিনি বলেন, ‘৭ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হই। বেড না পাওয়ায় ৩ হাজার টাকা দিয়ে এসি কেবিন ভাড়া নেয়া হয়। বেডের পাশেই চেয়ারে বসে আমার সুশ্রূষা করছিলেন স্ত্রী সীমা খাতুন। হঠাৎ ছাদের পলেস্তরা খসে তার মাথায় পড়ে। এতে মাথা ফেটে যায়। সেখানে ছয়টি সেলাই দিতে হয়েছে। আমরা এখনও ভয়ে আছি।’
রিপনের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার কলেজপাড়ায়। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছেন আহতের ছেলে প্রান্ত আলী।
এ ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভবনের দায়-দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগের। তারাই সংস্কার করে থাকে। তাদের খবর দেয়া হয়েছে। পরামর্শ দিলে এই অংশ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে।’
ছুটিতে আছেন জানিয়ে তিনি এ ব্যাপারে আরও তথ্যের জন্য সহকারী পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালের এই ভবনটি অনেক পূরনো। গত শতাব্দীর ষাটের দশকের। এই ভবনের ব্যাপারে হাসপাতাল থেকে বার বার চিঠি দেয়া হয় গণপূর্তকে। টেলিফোনে কথা হয়। তারা রিপেয়ারও করে দেয়। বোঝার উপায় থাকে না খসে পড়বে কি-না।
‘দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনাই। আমরা আহতের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এখন তিনি ভাল আছেন।’
এদিকে কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনার কথা শুনেছি। দেখার জন্য লোকও পাঠিয়েছি। আমিও আগামীকাল পরিদর্শনে যাবো। ঢাকা থেকে উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ এনে এই ভবন পরিত্যক্ত হবে কি-না সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমস্যার কথা না জানালে আমরা কীভাবে ব্যবস্থা নেব? যদিও আমরা নিয়মিত পরিদর্শন করি। তবে এই ভবনের ছাদের ওপর পুরনো বেডসহ কিছু মালামাল আছে। সেগুলো সরানোর জন্য তাদের বলা হলেও সরায়নি। উপরে মালামাল থাকলে সেখান থেকে পানি জমে ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
এ ব্যাপারে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা বার বার উদ্যোগ নিয়েও জায়গা না থাকায় এগুলো সরাতে পারিনি। আবার যেখানে সেখানে ফেলেও রাখা যায় না। কারণ সেসব চুরি হয়ে গেলেও সমস্যা।’