বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মশার কাছে অসহায় সিসিক

  •    
  • ৮ এপ্রিল, ২০২৩ ১৫:১৩

‘প্রজননস্থল ডোবা-নালা বা জলাশয় সঠিকভাবে পরিষ্কার না করে কেবল ওষুধ স্প্রে করলে কোন ফল পাওয়া যাবে না। আবর্জনার মধ্যে মশার জীবানু থেকে যাবে।’

মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন সিলেট নগরের বাসিন্দারা। নগরজুড়ে দিন রাত সবসময়ই লেগে থাকছে মশার উৎপাত। নগরবাসীকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে পারছে না সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)।

নগরের উপশহার এলাকার একটি বহুতল ভবনের ৯ তলায় থাকেন আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আগে কেবল রাতের বেলা মশার উৎপাত ছিলো। এখন দিন-রাত কোন বিভেদ মানছে না মশা। সবসময়ই কামড়া”েছ। এছাড়া নয় তলার উপরেও উড়ে চলে আসছে। এতে দিনেও আমরা বাসার দরজা জানালা খুলে রাখতে পারি না।’

‘দীর্ঘদিন ধরে মশার এই যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে। তবে সিটি করপোরেশন মশা নিধনে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। লোক দেখানো কার্যক্রমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তাদের মশক নিধন অভিযান। প্রতিবছর মশক নিধন কার্যক্রমে গড়ে ২ কোটি টাকা খরচ করা হলেও তা নগরবাসীর কোন উপকারে আসছে না।’

নগরের জিন্দাবাজার এলাকার পোষাক ব্যবসায়ী সোহেল আহমদ বলেন, দোকানের ভেতরে মশার যন্ত্রণায় বসা যায় না। কিছুক্ষণ পরপর এরোসোল স্প্রে করতে হয়। অনেক ক্রেতা এরোসোলের গন্ধ সহ্য করতে পারেন না। তারা দোকানে ঢুকেই ফিরে যান। এতে এই ঈদের মৌসুমেও ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এমন অভিযোগ বেশিরভাগ নগরবাসীর। মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিয়ে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, লোকবল সঙ্কটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে তাদের কার্যক্রম।

সিলেট নগরের উপশহর, শিবগঞ্জ, সোবহানীঘাট, টিলাগড়, সুবিদবাজার, মদিনামার্কেট, কাজলশাহ, শামীমাবাদসহ অন্তত ২০ টি এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি এলাকায়ই এবার আগের বছরগুলোর তুলনায় মশার উপদ্রব বেড়েছে। মশা নিধনে এবার সিসিকের কার্যক্রম তুলনামূলক কম বলেও অভিযোগ তাদের।’

নগরের ড্রেন নালায় ময়লা আবর্জনা জমে থাকায় মশার উপদ্রব বেড়েছে বলে জানান নগরের সুবিধবাজার এলাকার বাসিন্দা চিকিৎসক ফয়সল আহমদ মোহিন।

তিনি বলেন, ‘নগরজুড়ে ভাঙাচোড়া চলছে। ড্রেন সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণ সামগ্রীর পড়ে আছে। এছাড়া ড্রেন ও নালায় আর্বজনা জমে আছে। এসব পরিষ্কার না করায় সম্প্রতি হওয়া বৃষ্টিতে মশার প্রজনন আরো বেড়েছে।

‘প্রজননস্থল ডোবা-নালা বা জলাশয় সঠিকভাবে পরিষ্কার না করে কেবল ওষুধ স্প্রে করলে কোন ফল পাওয়া যাবে না। আবর্জনার মধ্যে মশার জীবানু থেকে যাবে।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মশক নিধনে লোকবল নিয়োগ দেওয়ার জন্য সম্প্রতি সিসিকের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু সিসিক চাইলেই তো লোকবল নিয়োগ দিতে পারে না। এজন্য পদ সৃষ্টি কওে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়। মন্ত্রণালয় নিয়োগ দেবে। এটা অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

‘এখন আমরা দৈনিক ভিত্তিতে লোকবল নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এই মূহূর্তে ১৫ টি ওয়ার্ডে প্রায় ৯০ জন কর্মী কাজ করছে। তবেএদেও সমস্যা হলো, তারা কেউই এ কাজে অভিজ্ঞ না। আবার চাইলেই সবসময় তাদের পাওয়া যায় না। এই যেমন ঈদের জ্জ দিন আগেই এই শ্রমিকদেও সবাই বাড়ি চলে যাবে। তখন এ কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. এসএম শাহরিয়ার বলেন, ‘বর্তমানে যে মশার উপদ্রব বেড়েছে তার নাম ‘কিউলেক্স’। ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই মশার প্রজনন মৌসুম। এই মশা খুব ক্ষতিকর না হলেও শিশু এবং বয়স্করা অসুস্থ হতে পারে।’

সিসিকের স্বাস্থ্য শাখা সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে (বর্ধিত নতুন ১২টি ওয়ার্ড ছাড়া) একযোগে ওষুধ ছিটাতে হলে অন্তত ১৫০ জন কর্মী প্রয়োজন। কিš‘ এই কাজের জন্য সিটি করপোরেশনের কোন জনবল নেই। ফগার মেীমন চালানোর জন্য কেবল দুজন লোক রয়েছেন। ফলে দৈনিক ভিত্তিতে লোকবল নিয়ে ওষুধ ছিটাতে হয়। এতে কখনোই একযোগে পুরো নগরীতে ওষুধ ছিটানো সম্ভব হয় না। ওয়ার্ড ভাগ করে কওে ওষুধ ছিটাতে হয়। এতে এক এলাকায় ওষুধ ছিটানোর পর মশা পার্শ্ববর্তী এলাকায় চলে যায়। তাই ওষুধ ছিটিয়েও ফল মিলছে না।

এ বিভাগের আরো খবর