বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায় সংক্রান্ত দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিভিউ নিষ্পত্তি করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
আপিল বিভাগের এ আদেশের ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদল্যায়কে আয়কর দিতে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, আপাতত আয়কর দিতে হবে না।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার ওমর সাদাত ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের আদেশের রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ আট বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
পরে আইনজীবী ওমর সাদাত বলেন, ‘আজকের আদেশের পরে আপাতত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আয়কর দিতে হবে না। হাইকোর্টে শুনানি করতে হবে। আদালত বলেছে, আয়কর দিতে হবে না, হাইকোর্টে শুনানি করতে হবে।’
অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আয়কর দিতে হবে। হাইকোর্টে মামলার শুনানি শেষ হবে, তারপর যা হবার, তাই হবে।’
২০০৭ সালের ২৮ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অনুমোদিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং অপরাপর বিশ্ববিদ্যালয় যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, তাদের উদ্ভূত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পুনর্নির্ধারণ করা হলো। ১ জুলাই থেকে এটা কার্যকর হবে।’
এরপর ২০১০ সালের ১ জুলাই এনবিআরের আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা শুধু তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজ ও উদ্ভূত আয়ের ওপর প্রদেয় আয়করের হার হ্রাস করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো।’
এটি চ্যালেঞ্জ করে ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ রিট করা হয়। পরে আরও ৪৬টি রিট করা হয়েছিল।
সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারের ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায় থেকে আপাতত বিরত থাকতে নির্দেশ দেয় হাইর্কোট।
এর আগে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারের ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায়ের দুই প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়ে আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে এ আপিল নিষ্পত্তি না পর্যন্ত এ আয়কর আদায় থেকে বিরত থাকতে এনবিআরকে নির্দেশ দিয়েছিল আপিল বিভাগ।