দেশের প্রতিটি বাজারে নকল ও অবৈধ পণ্যে ভরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন ‘দেশ নকল-ভেজালে ভড়ে গেছে। এমন কোন কসমেটিক নেই যা নকল হচ্ছে না। অনেক দেশীয় ভালো কিছু ব্র্যান্ডকেও কপি করছে। সেগুলোতে এমনকিছু ক্যামিকেল ব্যবহার হচ্ছে, যেগুলোতে ত্বকের ক্যান্সার থেকে শুরু করে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।’
বুধবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার টিসিবি ভবনে ভোক্তা অধিদপ্তরের কসমেটিকস পণ্য আমদানীকারকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, ‘এসব ভেজাল প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে। অভিযানে ব্যবসায়ী কমিটি বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘মৌলভীবাজারে ভোক্তা অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে, এটা খুবই দুঃখজনক। পরবর্তীতে যেসব বাজারে অভিযান পরিচালনা হবে, সেখানে কোন ঝামেলা হলে বাজার ব্যবসায়ী কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সফিকুজ্জামান বলেন, ‘কাপড়চোপড়ে ভেজাল বেশি হয় না, কিন্তু কসমেটিকসের ভয়াবহ অবস্থা। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে। গত বছর একটা মিটিংয়ে কিছু ফাইন্ডিংস পেয়েছিলাম। এতে দেখা গেছে, কসমেটিক মূলত প্যাকেজাত হয়, খোলা বিক্রি হয় না। কিন্তু প্যাকেটজাত পণ্যগুলোতে বিএসটিআইয়ের কোন মোড়ক থাকে না।
‘কসমেটিকসের বড় একটা অংশই আমদানি হয়। কিন্তু অভিযানে দেখা গেছে, যে পণ্যগুলো বিদেশ থেকে আসছে, সেগুলোর কোথাও আমদানিকারকদের কোন তথ্য নেই। এমনকি খুচরা বাজার থেকে কিনতে গেলে বিএসটিআইয়ের কোন সিল থাকে না। প্রতিটা পণ্য দেশে আসলে অবশ্যই বিএসটিআইয়ের অনুমোদন থাকতে হবে। দামটাও সেভাবেই নির্ধারণ হবে।’
ঈদ উপলক্ষে বিশেষ কিছু পণ্য অনেক বিক্রি হয়, এরমধ্যে কসমেটিকস অন্যতম। সারা বছর যা বিক্রি হয়, ঈদেই বেশি বিক্রি হয়। কিন্তু ঈদকে টার্গেট করে ব্যবসায়ীরা নতুন করে মূল্য বৃদ্ধি করে। অনেকক্ষেত্রে একই পন্যের উপর একাধিক ট্যাগ ব্যবহার করে। দোকানের পিছনে একটা জায়গা থাকে, সেখানে নিয়ে ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করা হয়। ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান নিয়মিত চলবে, কোন ধরনের নকল, ভেজাল বা মূল্যবৃদ্ধি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে দাম বাড়ালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারসহ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালকরা, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক, ক্যাবের প্রতিনিধি, এনএসআইয়ের প্রতিনিধি, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতিসহ অন্যান্য প্রতিনিধি, টোকিও স্কয়ার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির প্রতিনিধি, স্বপ্ন, আলমাস, লা রিভ, টপ টেন গ্রুপ, কালার ওয়ার্ল্ড, আগোরা, এভার বিউটি, বিডি বাজার বিউটি, বিউটি এশিয়াসহ বিভিন্ন কসমেটিকস ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ আরও অনেকে।