মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক’ সংবাদ প্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের শত সংস্কৃতিসেবী। মঞ্চসারথি আতাউর রহমান এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত নাট্যজনরা এ বিষয়ে বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘লাখো শহিদের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে অর্থবহ করে তুলতে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং জনগনের অধিকার সুনিশ্চিত করতে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
‘আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রাম ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনে এদেশের সংবাদ মাধ্যম যথেষ্ট সাহসী ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় স্বৈরশাসনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে এদেশের গণমাধ্যম কর্মীরা যথেষ্ট সাহসিকতা ও সততার সঙ্গে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছে।‘কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে দৈনিক প্রথম আলো নামক পত্রিকাটি ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে একটি বিভ্রান্তিকর সংবাদ ও ছবি প্রকাশ করেছে যেখানে আমাদের মহান স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতার অঙ্গীকারকে হেয় এবং প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের নামে কেউ যদি আমাদের রাষ্ট্রের মূলভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে সেটি কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
‘ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে প্রকাশিত সংবাদটি ভুল নয় বরং সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এই পত্রিকাটির এ-ধরনের উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশের ঘটনা আমরা আগেও প্রত্যক্ষ করেছি।
‘বিভিন্ন সময় বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণে দেশি-বিদেশি অপতৎপরতা চলেছে। যে কোনো ইস্যুকে কেন্দ্র করে অনেকেই আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দুঃখজনক হলেও সত্য প্রথম আলো পত্রিকাটিকেও বিভিন্ন সময়ে সেই ধরনের একটি ভূমিকায় অবর্তীণ হতে দেখা যায়। আমার দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে এই ধরনের অপতৎপরতা ও জঘন্য কাজের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাই।
‘আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। দেশ ও জনগণের প্রতি সংবাদ মাধ্যমের দায়িত্বশীলতা ও দায়বদ্ধতা অনেক। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার নামে সেই দায়িত্বশীলতা ও দায়বদ্ধতা অস্বীকার করার কিংবা প্রশ্নবিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নাই। এবং অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বানোয়াট তথ্য পরিবেশন কোনোক্রমেই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হতে পারে না।
‘তাই দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমরা যারা সাক্ষর করেছি, তদন্ত সাপেক্ষে এই ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের মূলোৎপাটন করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি প্রকাশিত সংবাদটিতে একজন শিশুকে ব্যবহার করার বিষয়টি সংবাদপত্র প্রকাশের নীতিমালা পরিপন্থী কিনা সেটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি। একইসঙ্গে সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করতে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ কোনো আইনের যেন অপপ্রয়োগ না হয় সেটিও নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করছি।’
এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, অভিনেতা এ এম আলমগীর, অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ, অভিনেতা রিয়াজ, অভিনেতা আজিজুল হাকিম, অভিনেতা সাজু খাদেম, অভিনেতা তুষার খান, অভিনেতা ফারুক আহমেদ, অভিনেতা প্রাণ রায়, অভিনেতা শংকর শাঁওজাল, অভিনেতা মানষ বন্দোপাধ্যায়, অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু, অভিনেতা এহসানুল হক মিনু, অভিনেতা আহমেদ রুবেল, অভিনেতা জায়েদ খান, অভিনেত্রী তারানা হালিম, অভিনেত্রী রোজিনা, অভিনেত্রী মনিরা ইউসুফ মেমী, অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন, অভিনেত্রী সুজাতা আজিম, অভিনেত্রী আফসানা মিমি, অভিনেত্রী লাকী ইনাম, অভিনেত্রী চিত্রলেখা গুহ, অভিনেত্রী অরুনা বিশ্বাস, অভিনেত্রী শমী কায়সার, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, অভিনেত্রী পুর্ণিমা, অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা এমপি, অভিনেত্রী আফরোজা বানু, অভিনেত্রী ফাল্গুনী হামিদ, অভিনেত্রী শামীমা ইসলাম তুষ্টি, অভিনেত্রী নিপুণ, অভিনেত্রী মাহিয়া মাহী, অভিনেত্রী তারিন, অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি, কণ্ঠশিল্পী শাহীন সামাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একাত্তরের শব্দসৈনিক একুশে পদকপ্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, কণ্ঠশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ, কণ্ঠশিল্পী তিমির নন্দী, কণ্ঠশিল্পী এস ডি রুবেল, কণ্ঠশিল্পী আবদুল কুদ্দুস বয়াতী, কণ্ঠশিল্পী অরুপ রতন চৌধুরী, কণ্ঠশিল্পী ফাতেমাতুজ জোহরা, কণ্ঠশিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন, কণ্ঠশিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়, কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি, কণ্ঠশিল্পী মুজিব পরদেশী, কণ্ঠশিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস, কণ্ঠশিল্পী পথিক নবী, কণ্ঠশিল্পী আলম দেওয়ান, কণ্ঠশিল্পী লিয়াকত আলী লাকী, কণ্ঠশিল্পী লিলি ইসলাম, কণ্ঠশিল্পী চন্দনা মজুমদার, কণ্ঠশিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল, কণ্ঠশিল্পী অদিতি মহসীন, কণ্ঠশিল্পী মলয় কুমার গাঙ্গুলী, কণ্ঠশিল্পী আবিদা সুলতানা, সঙ্গীতশিল্পী রফিকুল আলম, সঙ্গীতশিল্পী এ এম এম মহীউজ্জামান চৌধুরী ময়না, সঙ্গীতশিল্পী শুভ্র দেব, নৃত্যশিল্পী অনীক বসু, নৃত্যশিল্পী মিনু হক, নাট্যকার জিনাত হাকিম, নাট্যকার ম. হামিদ, নাট্যকার ঝুনা চৌধুরী, আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা, আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ, আবৃত্তিশিল্পী ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু, নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ, কবি নির্মলেন্দু গুণ, কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা, কবি অসীম সাহা, কবি মুহাম্মদ সামাদ, কবি তারিক সুজাত, কবি রবীন্দ্র গোপ, কবি জাফর ওয়াজেদ, কবি আসলাম সানী, কবি মিনার মনসুর, কবি শিহাব শাহরিয়ার, কথাসাহিত্যিক হরিশংকর জলদাস, সংস্কৃতিজন গোলাম কুদ্দুছ, সংস্কৃতিজন আসাদুজ্জামান নূর এমপি, চিত্রশিল্পী হাশেম খান, চিত্রশিল্পী আবুল বারক আলভী, চিত্রশিল্পী মোঃ মনিরুজ্জামান, চিত্রশিল্পী নিসার হোসেন, চিত্রকর ফয়জুল আলম পাপ্পু, নির্মাতা মাসুদ পথিক, চলচ্চিত্র সম্পাদক জুনায়েত হালিম, চিত্রশিল্পী হামিদুজ্জামান খান, চিত্রশিল্পী দুলাল চন্দ্র গাইন, চিত্রশিল্পী জামাল আহমেদ, চিত্রশিল্পী কামাল পাশা চৌধুরী, চিত্রশিল্পী সঞ্জীব দাস অপু, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, শিশুসাহিত্যিক আনজীর লিটন এবং উপস্থাপক আনজাম মাসুদ।