রাজধানীর রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামস।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নুর সোমবার এ আদেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার।
তিনি জানান, পুলিশ প্রতিবেদন না দেয়া পর্যন্ত তাকে ২০ হাজার টাকা মুচকেলায় জামিন দেয়া হয়েছে।
আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার জামিন শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন মঞ্জুর করে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শামসুজ্জামান রমনা থানার যে মামলায় জামিন পেয়েছেন, সে মামলার আসামি প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানও। তিনিও আগেরদিন এ মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন।
শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে এ মামলা ছাড়াও রাজধানীর তেজগাঁও থানায় আরেকটি মামলা রয়েছে।
সংবাদ প্রকাশের জেরে গত ২৯ মার্চ আটক করা হয় শামসুজ্জামানকে। পরে তাকে তেজগাঁ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে একই আইনে দ্বিতীয় মামলা হয় রমনা থানায়।
৩০ মার্চ আদালতে নেয়া হয় শামসুজ্জামানকে। পরে রমনা থানা-পুলিশ তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে। ওইদিন তার জামিন আবেদন নাকচ হয়। এরপর সোমবার সকালে তার পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়।
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, যাতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে একজন শ্রমিকের ক্ষোভের বার্তা ছিল। ওই প্রতিবেদনটিতে স্মৃতিসৌধে ফুল বিক্রেতা শিশু সবুজ মিয়ার বক্তব্য ছিল। একই প্রতিবেদনে জাকির হোসেন নামে দিনমজুরের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।’
প্রতিবেদনটির ভিত্তিতে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে ফটো কার্ড ছাপা হয়েছিল। এতে উদ্ধৃতিটি ছিল দিনমজুর জাকিরের আর ছবি ছিল ফুল বিক্রেতা সবুজের। ওই পোস্টে ছবি, উদ্ধৃতির এ গরমিলের পর প্রথম আলোর পক্ষ থেকে পোস্টটি সরিয়ে ফেলা হয়। পরবর্তী সময়ে সংশোধনী দেয় সংবাদমাধ্যমটি।
এ নিয়ে বেসরকারি একাত্তর টিভিতে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাত বছরের শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে দৈনিক প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক ছবি তুলেছেন বলে দাবি ওই শিশু ও তার পরিবারের।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এ ধরনের সংবাদের মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেছে প্রথম আলো।