বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সিলেটে ইফতার মানেই আখনি’

  •    
  • ৩ এপ্রিল, ২০২৩ ১৩:২৪

সিলেটে এবার কেজি প্রতি গরুর আখনি ৩৪০ থেকে ৩৮০, খাসির আখনি ৪০০ থেকে ৪৫০ এবং মুরগির আখনি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ইফতারের সময় খিচুড়ি বা আখনি না খেলে তো পেট ভরে না। মনে হয় কিছু খাওয়া হয়নি। ইফতারই যেন অপূর্ণ থেকে যায় বলছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা বাবর আহমদ।

বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের আম্বরখানা এলাকায় কথা হয় তার সঙ্গে। আম্বরখানার একটি ইফতার সামগ্রীর দোকান থেকে তখন আখনি কিনছিলেন বাবর।

বাবর আখনি কিনছিলেন যে দোকান থেকে সেই ফুড কিংয়ের বিক্রেতা আল আমিন বলেন, ‘আমরা ইফতারির ৮ থেকে ১০টি আইটেম বিক্রি করি। তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় পাতলা খিচুড়ি ও আখনি। সিলেটে তো ইফতার মানেই আখনি আর খিচুড়ি।’

ইফতারে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে খিচুড়ির প্রচলন থাকলেও আখনি মূলত সিলেট অঞ্চলেই পাওয়া যায়। ঢাকায় যেমন তেহারি, সিলেটে তেমন আখনি। বছরজুড়েই অভিজাত রেস্টুরেন্ট থেকে মোড়ের কিংবা সড়কের পাশের খাবার দোকানেও আখনি বিক্রি হয়। তবে রমজানে এর কেনাবেচা বাড়ে। পাতে আরও নানাবিধ আইটেম থাকলেও আখনি সিলেটিদের ইফতারের আবশ্যক আইটেম। ইফতার পার্টি বা যে কোনো রেস্টুরেন্টের ইফতার প্যাকেজ কিংবা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে পাঠানো ইফতার সামগ্রীতে আখনি থাকবেই। ঘরোয়া ইফতার খিচুড়ি দিয়ে সেরে নিলেও মেহমানদারি বা ইফতার পার্টিতে আখনি থাকবেই।

অনেকটা বিরিয়ানির মতো হলেও আখনি মসলাবহুল খাবার। খেতে কিছুটা ঝাঁঝালোও। আখনি তৈরিতে সাধারণত সুগন্ধি চাল ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও কালিজিরা ও চিনিগুড়া চাল দিয়েও আখনি তৈরি করা হয়। সঙ্গে মসলা হিসেবে থাকে পিঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচামরিচ, ডালচিনি, এলাচ, মটরশুঁটি ইত্যাদি।

আখনি গরু, মুরগি ও খাসির মাংস দিয়ে তৈরি হয়। যে মাংস যুক্ত করা হয়, সেই মাংসের নাম উল্লেখ করে আখনি পরিচিতি পায়। মাংসভেদে দামও আলাদা। সিলেটে এবার কেজি প্রতি গরুর আখনি ৩৪০ থেকে ৩৮০, খাসির আখনি ৪০০ থেকে ৪৫০ এবং মুরগির আখনি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেটসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ইফতারের দোকানের সামনেই ক্রেতাদের ভিড়। বেলা যত বাড়ে ভিড়ও তত বাড়ে। সব দোকানেই রয়েছে বিভিন্ন মাংসের আখনি আইটেম।

নগরের জিন্দাবাজার এলাকার পানসী রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘রমজান মাসে আমাদের রেস্টুরেন্টে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় গরুর আখনি। পারসেল বিক্রি করতে গিয়ে অনেকদিন আমরা রেস্টুরেন্টে বসে ইফতার করা ক্রেতাদের আখনি দিতে পারি না। তার আগেই শেষ হয়ে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিলেটের বাইরে ইফতারিতে ছোলা, পিঁয়াজুর সঙ্গে মুড়ি খাওয়া হয়। তবে সিলেটে মুড়ি একেবারে চলে না। সিলেটের ইফতার আইটেমে আখনি কিংবা খিচুড়ির সঙ্গে ছোলা ভুনা থাকবেই।’

সিলেটের রন্ধনশিল্পী সেলিনা চৌধুরী বলেন, ‘পোলাও-বিরিয়ানি রান্নার প্রণালির সঙ্গে আখনির মিল রয়েছে। তাই এতে পোলাও-বিরিয়ানির স্বাদও পাওয়া যায়। আর খুবই ঘ্রাণময় হওয়ায় আখনির ঘ্রাণই ভোজন রসিকদের টেনে আনে।’

তবে সারাদিন অভুক্ত থাকার পর ইফতারের সময়ে অধিক পরিমাণ আখনি না খাওয়ার পরামর্শ তার।

আখনি ও খিচুড়ি ছাড়াও সিলেটের ইফতারের আইটেমে থাকে জিলাপি, ছোলা বোনা, পেঁয়াজু, শাখাসহ বিভিন্ন আইটেম। বারখানি আর হালিমও থাকে ইফতারের আইটেমে।

এ বিভাগের আরো খবর