বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফেসবুকে ঘুরছেন হ্যান্ডসাম সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ

  •    
  • ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৭:০৪

‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, চল্লিশ দশকের লেখক। লালসালু, বহ্নিপীর, চাঁদের অমাবস্যা, কাঁদো নদী কাঁদো-এর জনক। ওয়ালীউল্লাহকে আপনি এমনিতে না চিনলেও পাঠ্যপুস্তকে লালসালুর নাম শোনেননি এমন হবে না। বিসিএস দিতে যান, তার লেখা প্রতিটা রচনা বিসিএসের পাঠ্য।’

ফেসবুকে ঘুরছেন কথাসাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম নক্ষত্র সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রীও। আধুনিক ও রুচিশীল পোশাকে যেন এক তারুণ্য ধরা দিয়েছে এই দম্পতির চোখে-মুখে।

গত কয়েকদিন ধরে ওয়ালীউল্লাহ ও তার স্ত্রী আন মারির তিনটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ ছবি শেয়ার করে লেখকের প্রতি ভালোলাগা ও পোশাক নিয়ে তার আধুনিকতার প্রশংসা করছেন অনেকে।

তিনটি ছবি কোলাজ করে বানানো হয়েছে একটি ছবি। এর একটিতে চেয়ারে বসে আছেন লেখক। শার্ট-প্যান্টে ইন, পায়ে জুতা, বাঁম হাতে ঘড়ি আর পকেটে সানগ্লাস তার; চুল আঁচড়ানো পরিপাটি করে।

আরেক ছবিতে সাদা শার্ট আর প্যান্ট পরে ইন করে পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছেন হ্যান্ডসাম ওয়ালীউল্লাহ। অন্য ছবিটাতে তাকে টাই পরে মাথায় ছাতা ধরে স্ত্রীকে এক হাতে জড়িয়ে ধরতে দেখা যাচ্ছে।

একাধিক ওয়েবসাইটে এ ছবিগুলোর খোঁজ পাওয়া গেছে। তবে ঠিক এগুলো কোন সময়ের তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য মেলেনি।

খোঁজ করে দেখা যায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি জান্নাতুল ফেরদৌস নামে একজন এই ছবি শেয়ার করেন বইপড়া সংক্রান্ত এক ফেসবুক গ্রুপে। ওই ছবির সঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, চল্লিশ দশকের লেখক। লালসালু, বহ্নিপীর, চাঁদের অমাবস্যা, কাঁদো নদী কাঁদো-এর জনক। ওয়ালীউল্লাহকে আপনি এমনিতে না চিনলেও পাঠ্যপুস্তকে লালসালুর নাম শোনেননি এমন হবে না। বিসিএস দিতে যান, তার লেখা প্রতিটা রচনা বিসিএসের পাঠ্য।’

পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘কি অসম্ভব রকম স্মার্ট ছিলেন এই মানুষটি দেখুন একটু। ওনার বেশিরভাগ উপন্যাস গ্রাম্য পটভূমিতে নাহয় মনস্তাত্ত্বিক। বিয়েও করেছিলেন একজন বিদেশিনীকে। সৃষ্টিকর্ম নিয়েই যার একগাদা কথা বলা যায়, সৃষ্টিকর্ম বাদেও সেই যুগে এমন হ্যান্ডসাম, স্মার্ট আর স্বাধীনচেতা মন মানসিকতার লেখক কল্পনা করা যায়?’

এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে ওয়ালীউল্লাহ ও তার স্ত্রীর ওই ছবি ও তাদের নিয়ে লেখাটি। অনেকেই সঙ্গে দু-এক লাইন যোগ করে নিজের ওয়ালে শেয়ার করছেন এই পোস্ট।লিখছেন তাদের ভালো লাগার কথা।

চিত্রনায়িকা জাহার মিতু পোস্টটি শেয়ার করে লিখেছেন, “প্রেমে পড়ে গেলাম।” সাংবাদিক ফারাহ জাবিন শাম্মী লিখেছেন, ‘ভাইরে আগে যদি জানতাম এই লেখক এমন হ্যান্ডসাম তাহলে আরও একটু মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সারাজীবন ভেবে এসছি লাল সালুর লেখক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ পাঞ্জাবি পরা পাকা দাড়ির একজন বয়স্ক মানুষ।’

ব্যাংক কর্মকর্তা তাশফিয়া তাসনিম তিশা পোস্টটি শেয়ার করে লিখেছেন,‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ।’ আরেকজন ভাইরাল পোস্ট শেয়ার করে লিখেছেন, ‘ভাবা যায়? উনি বিখ্যাত লালসালু উপন্যাসের লেখক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ! সারা জীবন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ সাহেবের খোঁচা খোঁচা কাঁচা পাকা দাড়িগোঁফ!!খাদি পান্জাবি পরা কি চেহেরা মনে মনে ভাবলাম! আর আজ কি দেখলাম!’

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ জন্মেছিলেন চট্টগ্রামের ষোলশহরে, ১৯২২ সালের ১৫ আগস্ট। বাবা সৈয়দ আহমাদুল্লাহ ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা, মা নাসিম আরা খাতুনও ছিলেন সমতুল্য উচ্চশিক্ষিত ও রুচিশীল পরিবার থেকে উঠে আসা।

পূর্ববাংলা ও বাংলাদেশের সাহিত্যে পথ দেখিয়েছেন এই লেখক, গড়ে তুলেছেন স্বতন্ত্র এক ভাষারীতি। ধর্মীয় গোঁড়ামি, ভন্ডামি, কুসংস্কারকে ব্যবচ্ছেদ করেছেন তিনি তার লেখায়। তার হাতে জন্ম নিয়েছে লালসালু, কাঁদো নদী কাঁদো, চাঁদের অমাবস্যার মতো উপন্যাস, নয়নচারা, দুই তীর ও অন্যান্য গল্প এর মতো গল্পগ্রন্থ কিংবা বহিপীর-এর মতো নাটকের।

বলা হয়ে থাকে, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ পাঠককে প্রভাবিত করেছিলেন তো বটেই, তার সাহিত্য দিয়েই প্রভাবিত করেছেন অসংখ্য সাহিত্যিককেও। অনেকে তাকে বলে থাকেন বাংলাদেশের সাহিত্য চর্চার ইন্সটিটিউট।

ছাত্র অবস্থাতেই সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর কর্মজীবন শুরু হয় স্টেটসম্যান পত্রিকায়। সরকারি চাকরি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বদলি হন ১৯৫২-র শেষের দিকে। সিডনিতেই পরিচয় হয় ফরাসি আন্-মারি লুই রোজিতা মার্সেল তিবোর সঙ্গে। দেড়-দু বছরের সখ্যতা ও ঘনিষ্ঠতার পর ১৯৫৫ সালের ৩ অক্টোবর বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর মারির নতুন নাম হয় আজজা মোসাম্মত নাসরিন।

এ বিভাগের আরো খবর