বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাত দলের হামলায় ৯ জেল নিখোঁজ হয়েছে। ডাকাতরা ৯ জেলেকে কুপিয়ে সাগরে ফেলে দিয়ে অন্যদের জিম্মি করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। শুক্রবার রাত দেড়টায় গভীর সাগরে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য বন্দর থেকে ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে এফবি ভাই ভাই নামে একটি মাছ ধরার ট্রলার ডাকাতদের কবলে পড়ে। ডাকাতরা ট্রলারের মাঝি ও ৮ জেলেকে কুপিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিয়ে বাকি ৯ জেলেকে জিম্মি করে লুটপাট চালায়।
শনিবার বিকেল ৫টার দিকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
তিনি জানান, শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে পায়রা বন্দর এলাকা থেকে গভীর বঙ্গোপসাগরে এই ডাকাতি ও হামলার ঘটনা ঘটে।
ট্রলারের সহকারী মাঝি নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মহিপুর থেকে বাজার সদাই নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের জন্য রওনা হয় এফবি ভাই ভাই ট্রলারটি। রাত ২টার দিকে পায়রা বন্দর এলাকা থেকে গভীরে যাওয়ার পর পেছন দিক থেকে একটি ট্রলার জোরে তাদের ট্রলারকে ধাক্কা দেয়। পরমুহূর্তে ওই ট্রলার থেকে এফবি ভাই ভাই ট্রলারে ৮/১০ জনের ডাকাত দল উঠে গুলি এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে।
এ সময় খোকন নামে এক জেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাগরে পড়ে যায়। এছাড়াও ট্রলারের মাঝি শফিক, কাইয়ুম জোয়াদ্দার, ইয়াসিন জোয়াদ্দার, আবুল কালাম, খায়রুল, আব্দুল হাই, আব্দুল আলীম ও ফরিদ মিয়াকে কুপিয়ে সাগরে ফেলে দেয় ডাকাতরা।
এরপর ট্রলারে থাকা বাকি ৯ জেলেকে জিম্মি করে জাল-দড়ি ও বাজার সদাইসহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। জিম্মি করা জেলেদের মধ্যে মধু ও আব্দুল হকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ট্রলার মালিকসহ সব জেলের বাড়ি বরগুনা জেলার নলী গ্রামে।
মোস্তফা চৌধুরী আরও জানান, লুট করে যাওয়ার সময় ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল করে দিয়ে যায় ডাকাতরা। এরপর ট্রলারটি ভাসতে ভাসতে মোবাইল নেটওয়ার্কের মধ্যে এলে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় তারা মালিক সমিতিকে বিষয়টি অবহিত করে। বিকল ট্রলার ও জেলেদের উদ্ধারে একটি ট্রলার পাঠানো হয়েছে।
র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গোপসাগর ডাকাতির খবর শুনেছি। ট্রলার মালিক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’