রাষ্ট্রপতি পদকে লাভজনক পদ বলা যাবে না। তাই মো. সাহাবুদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার হলেও দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর এসব কথা বলেন।
দুদকের আইন অনুযায়ী কমিশনাররা লাভজনক কোনো পদে যেতে পারেন না। রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক নাকি লাভজনক নয়- এ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মো. আলমীর বলেন, ‘দুদকের আইনে বলা আছে, কমিশনাররা লাভজনক পদে যেতে পারবেন না। কিন্তু আপনারা জানবেন যে, নির্বাচন কমিশন আইনকানুন জেনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন সাহেব যখন রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন তখন এটি নিয়ে কোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। কারণ বিচারপতির ক্ষেত্রেও একই আইন যে, উনারা লাভজনক পদে যেতে পারবেন না।
‘ওই মামলায় হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছিলেন। তাতে বলা হয় যে এতে কোনো বাধা নেই। সেই আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিলও হয়নি।
‘অতএব যেহেতু আমাদের সামনে উচ্চ আদালতের একটি সুনির্দিষ্ট উদাহরণ রয়েছে যে রাষ্ট্রপতি পদকে লাভজনক পদ বলা যাবে না। ওই রায়ে এটাও বলা আছে, লাভজনক পদ বলতে বুঝাবে প্রজাতন্ত্রের যারা কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদেরকে। এটি স্পষ্ট বলা আছে।
‘অতএব এটি ওনার (মো. সাহাবুদ্দিন) জন্য প্রযোজ্য নয়। ওনার রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হতে আইনগত কোনো বাধা নই।’
১৯৯১ সালে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীনের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মামলা ও সর্বোচ্চ আদালতের রায়ই ইসি মূল হিসেবে দেখছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লাভজনক পদ বলতে কী বুঝাবে তা স্পষ্টভাবেই বলা আছে, যদিও তালিকা দেয়া নেই। তবে লাভজনক পদের ক্ষেত্রে বলা আছে- প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত এবং কোনো প্রতিষ্ঠানে যদি সরকারের ৫০ ভাগের অধিক অর্থ থাকে, তাহলে সেই পদে নিয়োগকে বলা হবে লাভজনক পদ।
‘রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী- ওনারা কিন্তু প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নন। এগুলো হলো সাংবিধানিক পদ। সেহেতু লাভজনক পদের ডেফিনেশনে এগুলো পড়ে না।’
রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল মঙ্গলবার। অথচ আগের দিনই মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ইসি। কোনো কারণে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে পারতেন। কিন্তু ইসির এই পদক্ষেপে তার সেই পথ বন্ধ। এদিক বিবেচনায় ইসির এই পদক্ষেপ আইনসিদ্ধ কী না?
এমন প্রশ্নে ইসি আলমগীর বলেন, ‘এটি অবশ্যই আইনসিদ্ধ। আইনে স্পষ্ট বলা আছে- যদি একাধিক প্রার্থী না থাকে এবং মনোনয়নপত্র বাছাই করার পর যদি দেখা যায় যে একক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সঠিক আছে, বৈধ আছে। তাহলে ওই সময় তাকে নির্বাচিত হিসেবে ঘোষণা দিয়ে দেবেন। সেক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই।’