‘প্রেম নিবেদন করতে এখন আর কেউ ফুল দেয় না। মোবাইল ফোনে ভালোবাসার কথা জানায়। এতে ফুলের চাহিদা কমেছে।’
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের আগের দিন সোমবার এভাবেই ব্যবসার মন্দা নিয়ে আক্ষেপ করছিলেন খুলনার শান্তিধাম এলাকার একটি ফুলের দোকানের কর্মী। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রযুক্তির বিকাশে ফুলের কদর কমেছে।
শান্তিধামের পুষ্পমালা দোকানের মালিক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আমরা প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকার ফুল এনেছি। সব ফুল বিক্রি হবে কি না, তা জানি না। কারণ অন্যান্য বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল থেকে ফুলের প্রচুর চাহিদা বেড়ে যেত, তবে এ বছর ফুলের তেমন কোনো চাহিদা নেই।’
দোকানগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, সব থেকে বেশি বিক্রি হচ্ছে গোলাপ ফুল। প্রতিটি গোলাপ সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যান্য সময়ে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হয় ১০ টাকা দরে। এছাড়া জারবেরা, গ্লাডিওলাস ও রজনীগন্ধা ফুলও দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
মহিউদ্দিন বলেন, ‘ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফুলের দাম দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক, তবে এবার ক্রেতাদের চাহিদা কম থাকায় দাম অস্বাভাবিক বাড়েনি।’
ওই দোকানের কর্মী আনাদি রায় বলেন, ‘আগে এমন সময়ে ফুলের প্রচুর চাহিদা অনেক থাকত। ১৪ ফেব্রুয়ারি দাম বেড়ে যাবে, এ ভয়ে অনেকে আগের দিন ফুল কিনে রাখত। তবে এবার অগ্রিম ফুল কেনার ক্রেতা কমে গেছে।’
জুঁইচামেলী গার্ডেনের কর্মচারি নয়ন বলেন, ‘আজকে তুমনামূলক কম বেঁচে কেনা হচ্ছে, তবে আগামী দিন যে বেচাকেনা হবে তাতে আমরা পুষিয়ে নেব।’
এ দিকে বাজারে ভালো মানের গোলাপ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
নাবনি নামের এক কলেজ ছাত্র বলেন, ‘ফুল কিনতে এসেছিলাম। তবে অধিকাংশ গোলাপের মান ভালো না। অন্যদিকে দামও বেশি চাচ্ছে। তাই যে পরিমান গোলাপ কিনতে চেয়েছিলাম, তার থেকে কম পরিমাণে কিনেছি।’
বিক্রেতারা জানান, খুলনার বাজারের সব চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে যশোরের গদখালী থেকে। ভালবাসা দিবস উপলক্ষে গত ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে সেখানের বাগানের মালিকরা গোলাপের কুঁড়িতে প্যাকেট পরিয়ে রাখে। এতে বেশিদিন গোপাল গাছে ধরে রাখা যায়। এতে গোলাপের মান কিছুটা খারাপ হয়।