ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে ঘিরে ‘রাজাকার বাহিনীর’ মতো ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রিন্স বলেন, ‘এ অবৈধ সরকার নিজেদের ক্ষমতাকে আবারও বেআইনি পন্থায় আঁকড়ে রাখতে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তারের পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে।’
‘ইউনিয়নে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও তাদের অনুগত প্রশাসন ব্যাপক দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও হুমকি দেয়া হয়েছে।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী লীগ এখন জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে মন্তব্য করে এমরান সালেহ বলেন, ‘বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শান্তিপূর্ণ যে কোনো কর্মসূচিতে হামলা ও গণগ্রেপ্তার চালানো হচ্ছে। ১১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়নে বিএনপির পদযাত্রার দিন পুলিশ সর্বত্র হামলা, নির্যাতন ও গুলি চালিয়ে নেতাকর্মীদের আহত, গ্রেপ্তার করে তাণ্ডব সৃষ্টি করে। আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে তথাকথিত শান্তি সমাবেশের নামে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন শান্তি কমিটির মতো অশান্তি সৃষ্টি করে ভীতিকর পরিস্থিতির মাধ্যমে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করেছে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ’পদযাত্রা কর্মসূচিকে ঘিরে এ পর্যন্ত নতুন ৪৫টি মিথ্যা ও গায়েবি মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিএনপির তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৭০৬ জনকে, অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৪ হাজার ৫১৭ জনকে। সারাদেশে ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন ১৫ জন।’
আওয়ামী লীগ দিশেহারা হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে এমরান সালেহ বলেন,’ বিএনপির পদযাত্রায় জনগণের অংশগ্রহণ দেখে আওয়ামী লীগ দিশাহারা হয়ে পড়েছে। সরকারের মন্ত্রী-নেতারা ইউনিয়ন পদযাত্রা নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছে। তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে দমন-পীড়ন শুরু করেছে। দমন-নিপীড়ন করে এই আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না। অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর পতন অত্যাসন্ন বলেই তারা চোখে সর্ষে ফুল দেখছে।’
তিনি বলেন,’ জনগণের কাছে শাক দিয়ে মাছ ঢেকে লাভ নেই। সরকার নিজের গর্ত নিজেই খুঁড়ছে। এই সরকার বেশি দিন টিকে থাকবে না। পৃথিবীতে কোনো ফ্যাসিবাদ টিকে থাকেনি। এই নির্দয় ফ্যাসিবাদী সরকারও টিকবে না। জবরদস্তি করে জনগণের ঘাড়ে চেপে বসে থাকার দিন শেষ হবে অচিরেই। চলমান আন্দোলনেই এই সরকারের পতন ঘটবে।’সারাদেশ থেকে গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়ে এমরান সালেহ বলেন, ‘হামলায় আহত নেতাকর্মীদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। একই সঙ্গে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারসহ হয়রানি বন্ধের জোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা এ বি এম মোশাররফ, জয়নাল আবেদীন, তাইফুল ইসলাম টিপুসহ অন্যরা।