পারিবারিক পূর্ব শত্রুতার জেরে বগুড়ার শাজাহানপুরের ৫ বছরের শিশু রোমানকে হত্যার পর গুম করার দায়ে দুই জনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুইজন হলেন শাজাহানপুরের ক্ষুদ্র কুষ্টিয়া গ্রামের ৩১ বছর বয়সী আব্দুল খালেক ও চোপিনগর দক্ষিণ পাড়ার ৪৮ বছর বয়সী আব্দুল মাজেদ। রায়ের সময় এই দুইজন পলাতক ছিলেন।
রায়ে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে ক্ষুদ্র কুষ্টিয়া গ্রামের ৬৪ বছর বয়সী আব্দুর রাজ্জাককে। তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
২০১১ সালের ২৩ আগস্ট শাজাহানপুরের চোপিনগর এলাকার মাহবুর রহমানের ছেলে রোমানকে হত্যার পর গুম করে আসামিরা। পরে ওই বছরের ২৮ আগস্ট একই এলাকার খলিল নামে একজনের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে রোমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসব তথ্য রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জহুরুল ইসলাম নিশ্চিত করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জহুরুল ইসলাম জানান, রোমানের দাদার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসামি খালেক ও মাজেদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। এছাড়া নিহতের পরিবারের সঙ্গে তাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল।
এসবের প্রতিশোধ নিতে আব্দুল খালেক ও আব্দুল মাজেদ শিশু রোমানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে রোমানকে চকলেটের লোভ দিয়ে নিয়ে আনেন। এ কাজের জন্য আব্দুর রাজ্জাককে ৮ হাজার টাকা দেন খালেক ও মাজেদ।
তিনি আরও জানান, খালেক ও মাজেদ দুজন মিলে রোমানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে ওই শিশুকে এলাকার এক প্রতিবেশির বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভিতর গুম করে রাখেন।
রোমান নিখোঁজের পর খালেকের আচরণে সন্দেহ হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনা স্বীকার করেন। এ সময় তিনি মাজেদ ও রাজ্জাকের সম্পৃক্ততাও জানান। পরে তাদের দেয়া তথ্যে রোমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিও দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জহুরুল ইসলাম জানান, সোমবার বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন আব্দুল খালেক ও আব্দুল মাজেদকে মৃত্যুদণ্ড দেন। একইসঙ্গে দুজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। এরপর থেকে আব্দুল খালেক ও আব্দুল মাজেদ পলাতক রয়েছেন। আর আব্দুর রাজ্জাককে যাবজ্জীবন ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিচারক। তাকে কারাগারে নিয়ে গেছে পুলিশ।