শারীরিক পঙ্গুত্ব নিয়ে জন্ম জসিম মাতুব্বরের। শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও মেধাবী জসিম জীবন গড়তে থেমে যাননি। পা দিয়ে লিখেই এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ২৯ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন জসিম মাতুব্বর।
পরীক্ষার্থী জসিম মাতুব্বর ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কদমতলী গ্রামের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা। তিনি ফরিদপুর সিটি কলেজের বিএম শাখা থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজ করেন মেধাবী এ শিক্ষার্থী। স্থায়ীভাবে নগরকান্দা বাজারে পা দিয়ে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করেন তিনি।
জসিম বলেন, ‘পড়ালেখা শেষ করে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে নিতে চাই। তাই স্বাবলম্বী হওয়ার সংগ্রামে নেমেছি। আমি সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাই। আমার স্বপ্ন লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষক হব।’
জসিম মাতুব্বরের বাবা হানিফ মাতুব্বর বলেন, ‘জসিম জন্মের পর থেকে প্রতিবন্ধী। তার দুটি হাতই নেই। স্বাভাবিক চলাফেরাও ঠিকমত করতে পারে না। তবে জসিম খুব মেধাবী। এসএসসিতেও সে ভাল ফলাফল করেছে। বাবা হিসেবে তার এ সাফল্যে আমি গর্বিত। জসিম আরও পড়ালেখা করে শিক্ষক হতে চায়।’
ফরিদপুর সিটি কলেজের অধ্যক্ষ কাজি আফসার হোসেন বলেন, ‘জসিমের পায়ের লেখায় জাদু আছে। অনেক দ্রুত ও সুন্দর করে লেখে সে। আমরা সবসময়ই জসিমের পাশে ছিলাম। ভবিষ্যতেও থাকব। জসিমের মেধা ও কৃতিত্ব আমার কলেজের নাম উজ্জ্বল করেছে।’
নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র নিমাই চন্দ্র সরকার বলেন, ‘পা দিয়ে লিখে এইচএসসি পাশ করা সহজ বিষয় নয়। ছোট থেকেই তার পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ। সামনে শিক্ষাজীবন আরও সহজ করতে প্রয়োজনে পাশে থাকার চেষ্টা করব।’
নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈনুল হক জানান, জসিম মাতুব্বর অত্যন্ত মেধাবী। জসিমের স্বপ্নপূরণে সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতা করা হবে। জসিমের পাশে সমাজের বৃত্তবানদেরও এগিয়ে আসতে হবে।