কুমিল্লা শহর থেকে দশ কিলোমিটারের বেশি দূরে নিভৃত পল্লিতে গড়ে উঠেছিল কলেজটি৷ নিয়ম শৃঙ্খলা, লেখাপড়া ও জবাবদিহিতায় অনন্য উদাহরণ সৃষ্টিকারী সোনার বাংলা কলেজটি ২০০০ সালে শুরু হয়। ভালো ফলাফলে সারা দেশে আলাদা পরিচয় সৃষ্টি করতে পেরেছে কলেজটি।
প্রতিষ্ঠার বছর সারাদেশে ফলাফল বিপর্যয়ের মধ্যেই কলেজটি চমৎকার ফলাফল করে। সেই থেকে শুরু। এবারও এইচএসসির ফলাফলে শতভাগ পাস করল। সব মিলিয়ে টানা ১১ বার কুমিল্লা বোর্ড সেরা ফলাফল অর্জন করল সোনার বাংলা কলেজ।
বুধবার দুপুরে ফলাফল প্রকাশে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে কলেজটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য আবু ছালেক মো. সেলিম রেজা সৌরভ বলেন, ‘এ বছর ৪২১ জনের মধ্যে ৩৯৬ জনের জিপিএসহ শতভাগ পাস করেছে।
এদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১৪৮ জন শিক্ষার্থীর সবাই জিপিএ ফাইভ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। মানবিক বিভাগ থেকে ১৩১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সবাই পাস করেছে এবং ১১৯ জন জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ১৪২ জন শিক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে এবং ১২৯ জন জিপিএ ফাইভ পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১২ থেকে ২০২২ পর্যন্ত টানা ১১ বার এ কলেজের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে শ্রেষ্ঠত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
‘সোনার বাংলা কলেজ থেকে ২০১২ সালে ২৫৮ জন, ২০১৩ সালে ৩০২ জন, ২০১৪ সালে ৩৩৭ জন, ২০১৫ সালে ৩৬০ জন, ২০১৬ সালে ৩১৯ জন, ২০১৭ সালে ৩১৮ জন, ২০১৮ সালে ৪৪৯ জন, ২০১৯ সালে ৩৬৩ জন, ২০২০ সালে ৩৬৭ জন, ২০২১ সালে ৪১৭ জন এবং ২০২২ সালে ৪২১ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সবাই পাস করেছে এবং যথাক্রমে ৬০ জন, ৬৭ জন, ১৩৩ জন, ১২৭ জন, ৯৩ জন, ৫০ জন, ৮৩ জন, ১০৪ জন, ২৬১ জন, ২৪১ জন এবং ৩৯৬ জন জিপিএ ফাইভ অর্জন করেছে।’
সোনার বাংলা কলেজের শিক্ষার্থীদের এ অসাধারণ সাফল্যের বিষয়ে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য আবু ছালেক মো. সেলিম রেজা সৌরভ বলেন, ‘শৃঙ্খলা বিধির যথাযথ অনুশীলন, ক্লাস কার্যক্রমে উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর শারীরিক-মানসিক বিকাশে ক্রীড়া সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, সর্বোপরি গাইড ও মোটিভেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের নিবিড় সংযোগ ঘটিয়ে আমরা সব শিক্ষার্থীর সাফল্য নিশ্চিত করার অবিরাম প্রচেষ্টায় আত্মনিবেদিত হয়ে কাজ করি।
সুযোগ্য গভর্নিং বডির সঠিক দিকনির্দেশনা এবং একদল মেধাবী, পরিশ্রমী, আত্মনিবেদিত শিক্ষক-শিক্ষিকার নিরলস শ্রম এবং শিক্ষার্থীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অর্জিত হয়েছে আমাদের গৌরবজনক ধারাবাহিক সাফল্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভালো ছাত্রের পাশাপাশি ভালো মানুষ গড়ার সুমহান লক্ষ্যে আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’