বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডান্ডাবেড়ি-হাতকড়ার অপব্যবহার বন্ধে আইনি নোটিশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২২ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৪:৩১

নোটিশে বলা হয়, মূলত ডান্ডাবেড়ির ব্যবহার শুধু জেল কোড এবং কারা আইনের আওতাধীন। আর বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশন অনুযায়ী প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কেবল হাতকড়া ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে; কোনোভাবেই ডান্ডাবেড়ি নয়।

গ্রেপ্তার আসামিদের ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া পরানো বন্ধ করার পাশাপাশি এ নিয়ে নীতিমালা প্রণয়নে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী রেজিস্ট্রি ডাকযোগে রোববার এ নোটিশ পাঠান।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, পুলিশপ্রধান এবং কারা মহাপরিদর্শকের কাছে নোটিশটি পাঠানো হয়।

সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করার অনুরোধ জানিয়ে ১৫ কর্মদিবসের সময় দিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তা না হলে বিবাদীদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

নোটিশকারী আইনজীবীরা হলেন আসাদ উদ্দিন, মীর এ কে এম নুরুন্নবী, জোবায়দুর রহমান, মিসবাহ উদ্দিন, আল রেজা মো. আমির, রেজাউল ইসলাম, কে এম মামুনুর রশিদ, আশরাফুল ইসলাম ও শাহীনুর রহমান।

নোটিশকারী আইনজীবী আসাদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, দৈনিক প্রথম আলোতে গত ২০ ডিসেম্বরে ছবিসহ একটি সংবাদ প্রকাশ হয়, যাতে দেখা যায়, গাজীপুরে একজন আসামি ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজা পড়াচ্ছেন। তার পরপরই ১৭ জানুয়ারি ছবিসহ আরেকটি সংবাদ প্রকাশ হয়, যাতে দেখা যায়, শরীয়তপুরে আরেক আসামি একইভাবে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় মায়ের জানাজা পড়াচ্ছেন।

এ সময়ের মধ্যেই একজন আইনজীবীসহ কয়েকজনকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে ঢাকা কোর্টে আনা হয়। এর কিছুদিন আগে আরেকজন আইনজীবীকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে কোর্টে আনা হয়।

তিনি জানান, এসব ঘটনা পত্র-পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কাছাকাছি সময়ে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, তানভীর হাসান তানু, প্রবীর শিকদার, শিল্পী জে কে মজলিস এবং কয়েকজন শিশুসহ অনেক আসামিকে হাতকড়া পরানোর ঘটনায় দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ির যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশনের প্রবিধান ৩৩০-এ হাতকড়া সংক্রান্ত বিধান রয়েছে। সেখানে শুধু পলায়ন রোধ করতে যতটুকু প্রয়োজন তার বেশি নিয়ন্ত্রণ আরোপ নিষেধ করা হয়েছে। যদি কোনো শক্তিশালী বন্দি সহিংস অপরাধে অভিযুক্ত হয় বা কুখ্যাত হিসেবে পূর্ব পরিচিত হয় বা অসুবিধা সৃষ্টিতে উন্মুখ থাকে বা রাস্তা দীর্ঘ হয় বা বন্দির সংখ্যা অনেক বেশি হয়, সে ক্ষেত্রে হাতকড়া ব্যবহার করা যেতে পারে। হাতকড়া না থাকলে দড়ি বা কাপড় ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। এ প্রবিধানের কোথাও ডান্ডাবেড়ি ব্যবহারের কথা নেই।

নোটিশকারী আইনজীবীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, জেলকোড এবং কারা আইনে কারা অপরাধের বর্ণনার পাশাপাশি শাস্তি হিসেবে অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে হাতকড়া এবং ডান্ডাবেড়ি ব্যবহারের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ কারাভ্যন্তরে কয়েদিরা সংশ্লিষ্ট ‘কারা অপরাধ’ করলে তার শাস্তি হিসেবে এর ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া যেসব কয়েদি পালিয়ে যান বা পলায়নে উদ্যত হন বা ষড়যন্ত্র করেন, তাদের হাতকড়া বা ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে। এর বাইরে এক কারাগার থেকে আরেক কারাগারে বন্দি স্থানান্তরের সময় ক্ষেত্রবিশেষে এর ব্যবহার করা যেতে পারে।

নোটিশে বলা হয়, মূলত ডান্ডাবেড়ির ব্যবহার শুধু জেল কোড এবং কারা আইনের আওতাধীন। আর বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশন অনুযায়ী প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কেবল হাতকড়া ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে; কোনোভাবেই ডান্ডাবেড়ি নয়।

এতে আরও বলা হয়, সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেবল আইন অনুযায়ী ছাড়া ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির ক্ষতি করা নিষিদ্ধ। অনুচ্ছেদ ৩৫ (৫) অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেয়া যাবে না বা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাবে না বা তার সঙ্গে এ ধরনের ব্যবহার করা যাবে না, কিন্তু আইনের এসব বিধানের বাইরে গিয়ে ডান্ডাবেড়ি এবং হাতকড়ার অপব্যবহার করা হচ্ছে, যা নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত অবমাননাকর ও তাদের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি।

এ বিভাগের আরো খবর