বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘যেভাবে দেশ চলছে সেভাবে চলতে পারে না। ক্ষমতাসীনরা চাপাবাজি করে জনগণকে আর দমিয়ে রাখতে পারবে না। আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় করাই আমাদের প্রথম দফা। সেই বিদায়টা সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে শনিবার এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ড্যাব) এই আলোচনার আয়োজন করে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘কোনো স্বৈরাচারই আপসে ক্ষমতা ছেড়ে যায় না। তাদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর বিকল্প নেই। অতীতে ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার এরশাদকে হটিয়েছে। তেমনই এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিদায় নেবে। এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
বর্তমান সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আজ দেশে গণতন্ত্র নেই। এই সরকার জনবিচ্ছিন্ন সরকার। তারা ১১ লাখ কোটি টাকা লুটে বিদেশে পাচার করেছে।’
দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা অর্থনীতি ধ্বংস করেছে তারা এর পুনর্গঠন করতে পারবে না। তাদেরকে বিদায় না দিলে দেশ মেরামত করা যাবে না।
‘দেশের বিচার ব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণে। তারা দলীয়করণের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। জনগণ আওয়াজ তুলেছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে কোনো সংকটের সমাধান হবে না।’
মোশাররফ বলেন, ‘আমরা দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে চাই। এজন্য ২৭ দফা প্রণয়ন করা হয়েছে। জিয়াউর রহমান যে লক্ষ্যে বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন সেগুলো বর্তমান সরকার ধ্বংস করেছে।
‘জিয়াউর রহমান দুটি ক্রান্তিকালে জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। একটি ২৫ মার্চের পর, আরেকটি ৭ নভেম্বর। আজ ক্ষমতাসীনরা নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বলে দাবি করে। অন্যদিকে বিএনপি হলো মুক্তিযোদ্ধাদের দল। আওয়ামী লীগে কোনো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা নেই। আমাদের দলে এখনো শাহজাহান ওমরের মতো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা জীবিত আছেন। এগুলো জীবন্ত ইতিহাস।’
ড্যাবের প্রধান উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, ‘আবারও দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করার প্রচেষ্টা প্রায় চূড়ান্ত। এর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এর বিকল্প নেই।’
ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম বলেন, ‘জিয়াউর রহমান নানা গুণে গুণান্বিত। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সফল রাষ্ট্রনায়ক। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। তিনি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে অসংখ্য কাজ করেছেন।’
সভাপতির বক্তব্যে ড্যাবের সভাপতি হারুন আল রশিদ বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা নিজ কানে শুনেছি। দেশের অসংখ্য মানুষ শুনেছে। তিনি দুবার স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু সেই ইতিহাস বিকৃত করছে আওয়ামী লীগ।’
সভায় আরও বক্তব্য দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ড্যাবের সহ-সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস, কোষাধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।