দেশে এক/এগার পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ বর্তমানে নেই বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপির চরম দুঃশাসনের কারণে দেশে এক-এগারো এসেছিল।’
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে বুধবার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বের বক্তব্য শেষে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম সম্পূরক প্রশ্নে এক-এগারো’র উল্লেখ করে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সরকার প্রধানের বক্তব্য জানতে চান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে তেমন কোনো পরিস্থিতি নেই। একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছিল। ঠিক সেইভাবে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত অত্যাচার-নির্যাতন চলেছে।
‘বিএনপি-জামায়াত জোট ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ব্রিটিশ হাই কমিশনারের ওপর হামলাসহ দেশব্যাপী নাশকতা চালিয়েছে। এরপর এক কোটি ২০ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরির মাধ্যমে তারা আবারও ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। জনগণ তা প্রতিহত করেছিল। বিএনপির চরম দুঃশাসনের কারণে এক-এগারো এসেছিল।’
অনেকেই আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের অপচেষ্টা করেছিল উল্লেখ করে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা ব্যর্থ হয়েছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী মিলিটারি ডিক্টেটরের পকেট থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়নি। আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে এদেশের মাটি ও মানুষের কাছ থেকে।
‘আওয়ামী লীগের শেকড় অনেকদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়াসহ অনেকেই চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে। কিন্তু পারেনি। পারবেও না। আওয়ামী লীগ টিকে আছে, থাকবে।’
আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তামাক চাষ বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জাতীয় পার্টির সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে মানুষ যখন চাষ করে তখন অর্থকরি ফসলের দিকে দৃষ্টি দেয়। এ কথা ঠিক যে আমাদের অনেক জমি অনাবাদি পড়ে আছে। উদ্যোগ নিয়েছি এসব জমি চাষের উপযোগী করার। অন্তত আরও ১০ হাজার একর জমি যাতে আবাদ করা যায় সে ব্যবস্থা নিয়েছি।’
আওয়ামী লীগের সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটোর প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জানান, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে মূল্যস্ফীতির প্রভাব হ্রাস পাওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এ কারণে রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে জ্বালানি তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশেও জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করতে হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির চাপ সহনীয় পর্যায়ে রাখতে এবং গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রাকে স্বাভাবিক ও সচল রাখতে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছি। পদক্ষেপগুলো হলো- আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ গত বছরের ৫ আগস্ট গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রলের মূল্য সমন্বয়/পুননির্ধারণ করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কমে এলে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লোকসান পূরণ করে দেশেও জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’