ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এক সদস্যের সঙ্গে ভিপি নুরের বৈঠকের বিষয়ে যথাযথ তদন্তের দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। সোমবার সংসদ অধিবেশনে কয়েকজন সদস্য এই দাবি তোলেন। একই সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করা হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার অধিবেশন চলাকালে পয়েন্ট অফ অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির সদস্য পীর ফজলুর রহমান বিষয়টি উত্থাপন করেন। পরে এ নিয়ে কথা বলেন শাসক দল আওয়ামী লীগের সদস্য বেনজীর আহমেদ।
পীর ফজুলর রহমান বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যায় দুবাইয়ে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন নতুন রাজনৈতিক দল গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর। পত্রিকায়ও খবর প্রকাশ হয়েছে। তিনি ডাকসুর ভিপি ছিলেন।
‘মোসাদ সদস্যের সঙ্গে নুরের হাসিমুখের ছবিও এসেছে। নুর বলেছেন এটি তার এডিট করা ছবি। পরে অভিজ্ঞ ফটোগ্রাফারদের সেটা দেখানো হয়। তখন দেখা যায় ছবিটি এডিট করা নয়, অরিজিনাল।
‘আবার এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখছি, নুর বলছেন যে আমি কথা বলেছি তো কী হয়েছে। আমি কারও সঙ্গে বৈঠক করতে গেলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে কেন।’
জাতীয় পার্টির এই সদস্য বলেন, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। আমরা এই সংসদে ফিলিস্তিনের নারী ও শিশু হত্যার প্রতিবাদ করেছি। নুর কারও সঙ্গে বৈঠক করতেই পারেন। তিনি সরকারকে পছন্দ না করতেই পারেন। কিন্তু যে দেশের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, যে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি মুসলিম নারী-শিশুকে হত্যা করছে, আমরা সেসব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছি, সেই দেশের গোয়েন্দা সদস্যের সঙ্গে বৈঠক আইনসম্মত নয়।
‘আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলব, এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া দরকার। তদন্ত করে সংসদে ৩০০ বিধিতে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করছি।’
আওয়ামী লীগের সদস্য বেনজীর আহমেদ তার বক্তব্যে ভিপি নুরকে একটা সন্ত্রাসের নাম বলে আখ্যায়িত করেন। এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এখানে ভিপি নুরের কথা এসেছে। ভিপি নুর আমি মনে করি একটা সন্ত্রাসের নাম।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিজয়ের মাসে বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে সমাবেশ করে। আমরা অবাক হয়ে যাই! এখানে তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর সুযোগ আমরা কাউকে দেব না।
‘বিএনপি এখন তলানিতে চলে গেছে। তাই তারা মরার আগে বিএনপিকে তাজা করতে চায়। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমরা তো কারও কাছে পরাজয় মানতে পারি না। আমরা একসঙ্গে থাকলে কেউ দেশের ক্ষতি করতে পারবে না।’
প্রসঙ্গত, নুরুল হক নুর সম্প্রতি কাতার সফরে যান। সেখান থেকে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে যান। সেখানে একজন বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করেন বলে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। দুবাইয়ে একটি রেস্টুরেন্টের সামনে সাফাদি ও নুরের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।