বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাড়িতে ঢুকে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা, ভাঙচুর-লুটপাট

  •    
  • ৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৯:০০

কচুয়ায় মো. মোজাহার মোল্লা নামের এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামে ওই কৃষকের বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের নারীসহ ৯ জন আহত হন।

বাগেরহাটের কচুয়ায় মো. মোজাহার মোল্লা নামের এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামে ওই কৃষকের বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের নারীসহ ৯ জন আহত হন। সন্ত্রাসীরা নিহত কৃষক ও তার স্বজনদের তিনটি বাড়িতে চালায় ভাঙচুর ও লুটপাট।

নিহত মো. মোজাহার মোল্লা আলিপুর গ্রামের মৃত জোনাব আলী মোল্লা ছেলে। ঘটনার পর ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ঢাল-সরকি ও রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে।

হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন মো. মোজাহার মোল্লার মা মোমেনা বেগম, চাচাতো বোন রিক্তা বেগম, মুক্তা বেগম, চাচাতো ভাই মতিয়ার রহমান, ইউনুস মোল্লা, চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী শাহিদা বেগম, মরিয়ম বেগম, ভাইয়ের ছেলে লিটু ও রাব্বি। আহত ব্যক্তিরা বাগেরহাট জেলা হাসপাতাল ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বথা বলে জানা যায়, আলিপুর গ্রামের প্রভাবশালী রাসেল শেখ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লার সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

এর আগে ওই হামলাকারীরাই হাফিজুর রহমান মোল্লাকে মারধর করেছিল। ওই হামলায় পঙ্গু হয়ে গেছেন হাফিজুর রহমান মোল্লা। তিনি গজালিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। মো. মোজাহার মোল্লা হাফিজুর রহমান মোল্লার চাচাতো ভাই। তিনি গজালিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। মোজাহার মোল্লার দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মো. মোজাহার মোল্লার বাড়ির ঘরের সামনে কয়েক জায়গায় রক্ত পড়ে রয়েছে। ঘরের ভেতরে স্ত্রী ও সন্তানরা কাঁদছেন। সহজসরল বাবাকে ওরা মেরে ফেলল বলে, বিলাপ করছেন মোহাজাহার মোল্লার মা মোমেনা বেগম।

মোমেনা বেগম বলেন, ‘জমি থেকে এসে ঘরের সামনে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল ছেলে মোজাহার মোল্লা। এর মধ্যে রাসেল শেখ, মহিদ শেখ, তুহিন শেখ, ইসমাইল, ইদ্রিস, কুদ্দুস, নজরুল সরদারসহ ১২-১৩ জন লোক রামদা, সড়কিসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে চড়াও হয়। তারা মোজাহারকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। বাধা দিলে তারা আমাকেও মারধর করে। আমি আমার সন্তানকে হত্যার বিচার চাই।’

প্রত্যক্ষদর্শী মো. আতিয়ার মোল্লা বলেন, ‘হঠাৎ করে দাও, লাটি, কুড়াল ও সড়কি নিয়ে ১০-১২ জন এসে মোজাহার মোল্লাকে কোপাতে শুরু করে। নিষেধ করলে ওরা মোজাহারের বৃদ্ধ মা মোমেনা বেগমকে মারধর করে। মোজাহারের ডাকচিৎকারে স্থানীয় কয়েকজন এগিয়ে এলে আরও কয়েকজনকে মারধর করে ও কুপিয়ে আহত করে হামলাকারীরা।’

এর আগে হামলার শিকার হন মোজাহার মোল্লার ভাই ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান মোল্লা। তার স্ত্রী মরিয়ম বেগম বলেন, ‘আমার ভাশুর মোজাহার মোল্লার হত্যাকারীরা আমার স্বামীকে হত্যার জন্য ঘরে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। বাধা দিলে আমার হাতে আঘাত করে। এলাকার লোকজন চলে এলে তারা পালিয়ে যায়।’

মরিয়ম বেগম আরও বলেন, ‘এর আগে হামলাকারীরা আমার স্বামীকে রাতের আঁধারে কুপিয়ে আহত করে। প্রায় এক মাস ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আমার স্বামী বাড়ি এসেছেন। তখনকার মারধরের বিচার হলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটত না।’

বাগেরহাট জেলা পুলিশের গণমাধ্যম শাখার সমন্বয়কারী পরিদর্শক এস.এম আশরাফুল আলম বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।’

উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে সাতটার দিকে মোজাহার মোল্লার হত্যাকারীরা কুপিয়ে ও মারধর করে ফেলে রেখে যায় তার ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. হাফিজুর রহমান মোল্লাকে। পরে তার বড় ভাই মো. আকরাম হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার সব আসামিরা জামিনে রয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর