বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আমরা চ্যালেঞ্জিং টাইম পার করছি: ওবায়দুল কাদের

  •    
  • ৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ২১:১৬

মঞ্চ ভেঙে পড়ার পর ওবায়দুল কাদের বলেন- একটু আগে আচমকা মঞ্চ ভেঙে গেছে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু নেতাদের মঞ্চে ওঠা, এত নেতা আমার দরকার নেই। আমাদের আরও কর্মীর দরকার। নেতা উৎপাদনের এত বড় কারখানা আমাদের দরকার নেই। কর্মী উৎপাদনের কারখান চাই, সেটাই হোক ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অতীতের সোনালী সময় ফিরিয়ে আনতে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের গৌরব রবি কে বলে অস্তাচলে? আমরা আজ অঙ্গীকার করবো, ছাত্রলীগের এই গৌরব রবিকে অস্তাচলে যেতে দেবো না। ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃত্বকে বলবো, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নবতর পথযাত্রার সূচনা করতে। আমরা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং টাইম পার করছি। সামনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ আমাদের অতিক্রম করতে হবেই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যু নেই। বঙ্গবন্ধু জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর তার উত্তরসূরী শেখ হাসিনা জাতির মুক্তির কাণ্ডারি।

শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানস্থলে এসে উপস্থিত হন। এরপর জাতীয় সঙ্গীত এবং দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।এ সময় মঞ্চে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীসহ সাবেক বর্তমান নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানস্থলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল ইউনিট, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর এবং জেলা কমিটি নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।এসময় কর্মীদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের কর্মীরা হতাশ কেন? রাজনীতি কমিটমেন্টের বিষয়। রাজনীতিতে কমিটমেন্ট থাকলে রেজাল্ট একদিন আসবেই। মূল্যায়ন একদিন হবেই। অনেক সংগ্রাম এবং আন্দোলনের বাঁধ পেরিয়ে আজ আমি আওয়ামী লীগের তিন তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। আমি আজ মোট ১৭ বছরের একজন মন্ত্রী। কে আমি? ছাত্রলীগ। আমি শেখ হাসিনার একজন নিবেদিত প্রাণ কমিটেড কর্মী।’

এ সময় ছাত্রলীগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে। করোনা সংকটে ঘরে ঘরে গিয়ে চিকিৎসাসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। ছাত্রলীগকে আমি সাধুবাদ জানাই। এখনও আমাদের অনেক পথ চলা বাকি।

দ্রুত ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কমিটি হয়েছে প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারির। বাকি কমিটি পূর্ণাঙ্গ হতে যেন দেরি না হয়। অনেক কর্মী আশা নিয়ে বসে আছে। তাদের প্রোভাইড করুন। দেরি করার কোনও সুযোগ নেই। উই হ্যাভ নো টাইম। আমরা প্রতিকূল স্রোতে সাঁতার কেটে চলছি। এই যুদ্ধে জয়ী হতে হবে।’তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। ঘুরে দাঁড়ানোই আমাদের চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ আমাদের অতিক্রম করতে হবে। ছাত্রলীগকে বলতে চাই, আমি তোমাদের কাছে স্মার্ট বাংলাদেশ..... এরপরই মঞ্চ ভেঙে পড়ে যান ওবায়দুল কাদেরসহ মঞ্চে উপস্থিত ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা।

এর কিছুক্ষণ পর ভাঙা মঞ্চ থেকে উঠে খালি জায়গায় দাঁড়িয়ে ফের বক্তব্য রাখেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘একটু আগে আচমকা মঞ্চ ভেঙে গেছে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু নেতাদের মঞ্চে ওঠা, এত নেতা আমার দরকার নেই। আমাদের আরও কর্মীর দরকার। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট কর্মীর দরকার। যেকোনো মঞ্চে গেলে সামনের লোকের চেয়ে মঞ্চে লোক বেশি। এত নেতা কেন? নেতা উৎপাদনের এত বড় কারখানা আমাদের দরকার নেই। কর্মী উৎপাদনের কারখান চাই। সেটাই হোক ছাত্রলীগ।’

পরে তিনি পায়রা উড়িয়ে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ছাত্রলীগের বিশাল শোভাযাত্রাটি অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ, মৎস্যভবন, প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন মোড়, জিরো পয়েন্ট হয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

এর আগে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, এই ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এক ইঞ্চি মাটিতেও পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের আস্ফালন সহ্য করা হবে না। তারা যেখানেই বাংলার মানুষের শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করবে সেখানেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের কঠোর হাতে দমন করবে। বাংলাদেশে পাকিস্তানি ভাবধারার পদলেহন করার চেষ্টা করা হলে সেই পা ভেঙে দেয়া হবে। যে হৃদয় আরেকটিবার শেখ হাসিনাকে হত্যার চিন্তা করবে সেই কলিজা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছিঁড়ে ফেলবে।’

ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ ঘোষণার পর এদেশের ছাত্র সমাজ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পক্ষে রায় দিয়েছে। আগামী নির্বাচনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিতে আমাদের শপথ নিতে হবে। আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করা দেশপ্রেমের অংশ।’

এদিকে মঞ্চ ভেঙে পড়ার ঘটনায় ছাত্রলীগের সাবেক সাত নেতা আহত হন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসাপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

আহতরা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক লিলি, ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ-সম্পাদক শেখ আনিসুজ্জামান রানা, বিএম’র ইসি মেম্বার মো. জাবেদ, বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বরিকুল ইসলাম বাঁধন ও ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সদস্য মো. জসিম উদ্দিন।

ঢামেক পুলিশ ক‍্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক )মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্চ ভেঙে আহতদের মধ্যে লিলি নামে একজনের পা ভেঙেছে, তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

এদিকে দুর্ঘটনার বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘অতিরিক্ত নেতা স্টেজে ওঠার কারণে ভেঙে পড়েছে, নাকি ডেকোরেশনের কোনও ত্রুটি আছে, তা খতিয়ে দেখবো। বিগত বছরগুলোতে যাদেরকে ডেকোরেটরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবারও তাদেরকেই দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও কেন এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনা সেটি আমরা খতিয়ে দেখবো।’

আহতের সংখ্যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে ৫-৭ জন আহত হয়েছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর