বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধান সংগ্রহ শূন্য, চালে ধীরগতি

  •    
  • ২ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৭:১১

দাম কম হওয়ায় চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত এক টন ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি কুষ্টিয়া খাদ্য বিভাগ। চাল কিছুটা সংগ্রহ হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে চালের মোকাম খ্যাত এ জেলায়।

দাম কম হওয়ায় চলতি ধান-চাল সংগ্রহ মৌসুমে এক টন ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি কুষ্টিয়া খাদ্য বিভাগ। চাল কিছুটা সংগ্রহ হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে চালের মোকামের জেলায়।

মিল মালিকরা বলছেন, হয় সরকারি দাম বাড়াতে হবে, নয়তো বাজারে ধানের দাম কমতে হবে। তা না হলে গুদামে চাল দিয়ে লোকসান হবে তাদের।

খাদ্য বিভাগ ধান সংগ্রহের আশা ছেড়ে দিলেও চালের বিষয়ে আশাবাদী।

সারা দেশে একযোগে আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ শুরু হয় ১৭ নভেম্বর। ওই দিন খাদ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন করেন।

কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলায় এবার ৫ হাজার ৫৬৮ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। কিন্তু গত দেড় মাসে এক টন ধানও সংগ্রহ করা যায়নি। ধান নিয়ে কৃষকরা গুদামে আসছেন না।

সরকার প্রতি মণ ধানের দাম ধরেছে ১ হাজার ১২০ টাকা (কেজি ২৮ টাকা)। বাজারে এর চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় ধান সংগ্রহের আশা ছেড়েই দিয়েছে খাদ্য বিভাগ।

কুষ্টিয়া সদরের কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বাজারে ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। তাই আমরা গুদামে কম দামে ধান দিচ্ছি না। তা ছাড়া সেখানে অনেক ঝামেলাও হয়।’

এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের ধান সংগ্রহের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো কৃষকদের জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। বাজারেই কৃষক ভালো দাম পাচ্ছেন। এতে সংগ্রহ অভিযানের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।’

এদিকে চাল সংগ্রহে প্রতি কেজির সরকারি দর ৪২ টাকা। এই দরে চাল দিতে গিয়ে ২ থেকে ৩ টাকা লোকসানে পড়ছেন বলে দাবি করেছেন মিল মালিকরা।

দেশ এগ্রো অটোমেটিক রাইস মিলের মালিক এম এ খালেক বলেন, ‘লোকসান জেনেও আমরা সরকারের মজুতে অংশ নিচ্ছি।

‘সরকার যে দামে ধান কেনার ঘোষণা দিয়েছে সেই দামে ধান কিনে চাল তৈরি করতে গেলে ৪৪ টাকার কমে দিলে লোকসান হয়। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করছি, সরকারও আমাদের সহযোগিতা করবে আশা করি।’

তিনি আশায় আছেন সরকার চালের সংগ্রহ মূল্য কেজিতে দুই টাকা বাড়িয়ে দেবে।

বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি ও ফ্রেশ এগ্রো অটোমেটিক মিলের মালিক ওমর ফারুক বলেন, ‘কুষ্টিয়ার অধিকাংশ অটো মিলের মালিক চাল দিতে খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। কিন্তু বাজারে ধানের দাম না কমলে সবাই চাল দিতে পারবেন না। সবাই লোকসান মেনে সরকারকে চাল দেয়ার মতো আর্থিক পরিস্থিতিতে নেই।’

এবারের মৌসুমে ধানের দাম কমেনি বলেও জানান তিনি।

এদিকে কুষ্টিয়া সদরের খাদ্য গুদামগুলোতে কিছুটা কর্মব্যস্ততা দেখা গেছে। অন্য বছর এ সময় যে চরম ব্যস্ততা থাকে ততটা না হলেও ট্রাক আসছে, চাল আনলোড হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার খাজানগরে দেশের অন্যতম চালের মোকাম থাকায় এ জেলায় প্রতি মৌসুমেই চাল সংগ্রহ অভিযান সফল হয়।

কুষ্টিয়া সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসীম ‍উদ্দিন বলেন, ‘গত কয়েকদিন হলো মিলগুলো থেকে ট্রাক আসছে। সংগ্রহ অভিযান সফল হবে বলে আশা করছি।’

সোমবার সকালে কথা হয় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘জেলায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ৬৩৬ টন। কিন্তু মিল মালিকদের সঙ্গে ১৩ হাজার টনের চুক্তি করা গেছে। ধীরে হলেও দেড় মাসে সাত হাজার টন চাল সংগ্রহ হয়েছে।

‘নতুন করে কয়েকজন মিল মালিক চুক্তি করেছেন। সব মিলিয়ে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা সফল হবে বলে আমরা আশাবাদী।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের তথ্যমতে, কুষ্টিয়ার খাজানগরে ৪৫০টি চালকল রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধশতাধিক বড় আকারের অটোমেটিক রাইস মিল। এসব মিলের সরু চাল সারাদেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এ চালের রাজ্য কুষ্টিয়ায় এবার সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কার কথা বলেছেন মিল মালিকরা।

এ বিভাগের আরো খবর