বছরের প্রথম দিন প্রাথমিকের খুদে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার কথা থাকলেও বরগুনা জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই তুলে দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
বরগুনা সদর উপজেলাসহ ছয়টি উপজেলার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছাড়া কেউ বই পায়নি। এতে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নানা সংকটের কারণে এবার বছরের প্রথম দিন সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে সবাইকে বই পৌঁছে দেয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, বরগুনা জেলায় মোট ৭৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এসব বিদ্যালয়ে ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
এর মধ্যে রোববার সকালে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যন্ত তিন শ্রেণির মোট ৬৭ হাজার ৪১৭ জন শিক্ষার্থীকে বই দেয়া হয়েছে।
তবে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির ৬৪ হাজার ৪০২ জন শিক্ষার্থীর কেউই বই পায়নি। বই নেয়ার জন্য বিদ্যালয়ে আসতে বলা হলেও খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে তাদের।
সদর উপজেলার ইউটিডিসি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার বাচ্চা এবার তৃতীয় শ্রেণিতে উঠেছে। শিক্ষকরা নতুন বই দেয়ার কথা বলে তাকে স্কুলে নিয়ে আসতে বললেও বই না দিয়েই শেষ পর্যন্ত বাড়ি পাঠানো হয়েছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বামনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কয়েকটি বিদ্যালয়ে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিরতণ হয়েছে। বাকি সব ইউনিয়নের বিদ্যালয়েই সদরের মতো প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির বই বিতরণ হয়েছে।
এ ছাড়া আমতলী উপজেলায় কোনো শ্রেণির বই-ই বিতরণ হয়নি।
বই না পাওয়ার বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘মুদ্রন ও কাগজ-সংকটের কারণে এবার সব বই সময়মতো পৌঁছায়নি। এ জন্য সবাইকে বছরের প্রথম দিন বই দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে বরগুনা জেলার সব বিদ্যালয়ে বই পৌঁছে দেয়া হবে।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বছরের প্রথম দিনই আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দিতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা শিগগিরই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেব।’