নগরবাসিকে যানজটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে আংশিকভাবে চালু হয়েছে মেট্রোরেল। প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর দিন বৃহস্পতিবার জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয় মেট্রোর দরজা।
বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোর বাণিজ্যিক যাত্রার দ্বিতীয় দিনে মেট্রোতে চড়তে পেরে বাধভাঙা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে।
দেশের মাটিতে প্রথম মেট্রোতে উঠে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেছেন অনেকেই। বিভিন্নভাবে আনন্দ প্রকাশ করে উৎসুক জনতা। এ সময় দেখা যায়, কেউ সেলফি তুলছেন। কেউ কেউ ভিডিও করছেন। কেউ বা ভিডিওকলে অপরপ্রান্তে থাকা স্বজনকে দেখাচ্ছেন আর বলছেন, ‘এই দেখ মেট্রোরেল। আমি মেট্রোতে উঠেছি।’
অনেকে আবার মেট্রোর প্লাটফর্ম থেকে পরবর্তী গন্তব্যে যাওয়া পর্যন্ত পুরো যাত্রার ভিডিও ধারণ করেন।
শুক্রবার ভোরে উত্তরা উত্তর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় এসব চিত্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৭টায় গেট খোলার অনেক আগে থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন সাধারণ মানুষ। এই স্টেশনের প্রথমেই দাঁড়িয়ে আছেন গাউসুল আজম। তিনি উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার এসে উঠতে না পেরে আজকে ভোর ৬টা থেকে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। একইভাবে ফজরের নামাজ পড়ে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন মিরপুরের বাসিন্দা ইয়াসমিন, পৃথা ও হাসনা। সবার আগে এসে লাইনে দাঁড়ানোর ইচ্ছা নিয়ে ফজরের নামাজ পড়েই এসে সারিতে দাঁড়িয়েছেন। সকাল সাড়ে ৭টায় গেট খোলার পর ভেতরে ঢুকতে পেরেই স্বস্ত্বি প্রকাশ করেন তারা। তাদের মত একই উচ্ছ্বাস দেখা গেছে সবার মধ্যে।
স্ত্রী সন্তান নিয়ে টঙ্গি এলাকা থেকে দিয়াবাড়ী স্টেশনে এসেছেন জহিরুল হক।
তিনি বলেন, ‘দেশের মাটিতে মেট্রোরেলে উঠব এটা ভাবনাতেও ছিল না। দেশের মাটিতে মেট্রোরেলে উঠে সেলফি তুলব না তা কি করে হয়। আমার এই সেলফির নাম দিয়েছি মেট্রো সেলফি।’
উত্তরার বাসিন্দা শেখ নিয়ামুল ইসলাম নিজেকে সৌভাগ্যবান দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা উত্তরা বাসিন্দারা বেশি ভাগ্যবান। দেশের প্রথম মেট্রোরেলে চড়ার সুযোগ আমরা পাচ্ছি। আজকে খুব সকালেই এসেছি মেট্রোতে উঠতে খুবই আনন্দ লাগছে। আগে কখনও মেট্রোতে উঠেনি। এই প্রথম মেট্রোরেলে উঠব এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। আগে টিভিতে দেখেছি, আর এখন নিজেরাই উঠব। এটা আমাদের ভাগ্য।’
নিয়ামুলের মত শত শত মানুষ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলে চড়ার স্বাদ মেটাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন। তবে অল্প সময়ে মেট্রোরেল চালু রাখায় অনেককে মেট্রোতে না উঠে ফিরে যেতে হয়েছে বিষন্ন মন নিয়ে। তাদের দাবি মেট্রোরেলের চালু রাখার সময়সীমা যেন আরও বাড়ানো হয়।
গত বুধবার বেলা ১১টা ৪ মিনিটে মেট্রোরেলের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী প্রান্তে উদ্বোধনস্থলে তিনি এই ফলক উন্মোচন করেন। এরপর বৃহস্পতিবার থেকে জন সাধারনের জন্য সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চালু করা হয় মেট্রোরেল।