রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়েছে রোববার মধ্যরাতে। প্রকাশ্যে প্রচার চালাতে না পারলেও নতুন কৌশল অবলম্বন করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া।
সোমবার প্রকাশিত সব জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার ভেতরে লিফলেট আকারে নগরবাসীর উদ্দেশে ২৯ দফা ইশতেহার দিয়েছেন তিনি।
সকালে পত্রিকা হাতে নিয়ে খুলতেই ২৯ দফা ইশতেহার সম্বলিত লিফলেট পাচ্ছেন পাঠকরা।
লিফলেটে রংপুরের জনগণের উদ্দেশে ২৯ ইশতেহার দিয়েছেন ডালিয়া। এর মধ্যে সিটির ছয়টি থানায় একটি করে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা, গ্যাস স‘যোগের মাধ্যমে কল কারখানা স্থাপন ও বেকার সমস্যা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে নগরীর বর্ধিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ২৭ ডিসেম্বর। তার একদিন আগে এমন লিফলেট পেলেন রংপুরবাসী।
নগরীর যানজটপূর্ণ এলাকায় পথচারীদের জন্য নিরাপদ রাস্তা ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ এবং শ্যামা সুন্দরী খালকে ঢাকার হাতিরঝিলের মতো করে সাজাতে মহাপরিকল্পনা নেয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডালিয়া।
এছাড়াও আছে বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত ফ্লাই ওভার নির্মাণ; সিটির ছয়টি থানায় একটি করে কবরস্থান, শ্মশান, ঈদগাহ মাঠ, খেলার মাঠ ও পুকুরের পাশে বিনোদনের ব্যবস্থা করা; শিশুদের জন্য আধুনিক পার্ক, বিভাগীয় জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা সংস্কার; ভাসমান ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ী দোকান নির্মাণ; ডাস্টবিন নির্মাণ ও পরিচ্ছন্ন কর্মী বাড়ানো ও পুরো শহরকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা।
ভূমিহীনদের পুনর্বাসন ও বস্তিবাসীদের সন্তানের জন্য সিটি করপোরেশনের আওতায় বিদ্যালয় স্থাপন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও সিটি করপোরেশনে স্থানীয় কোটা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডালিয়া লিফলেটের মাধ্যমে।
রংপুর হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মোফাজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ছোট-বড় মিলে রংপুরে ২০ হাজার পত্রিকা প্রতিদিন সকালে পাঠকের হাতে তুলে দেয়া হয়।
রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে কথা হয় পত্রিকা পাঠক মঞ্জরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সকালে পত্রিকা হাতে নেই। মোটামুটিভাবে সব পত্রিকা দেখি। আজ ১০টা পত্রিকা খুলছি সব পত্রিকাতেই ডালিয়ার একটা করি কাগজ পাইলাম। ওই কাগজে সিটি করপোরেশন নিয়ে অনেক লেখা।’
নজরুল ইসলাম নামে আরেক পাঠক বলেন, ‘পত্রিকা খুলে যে কাগজ পাইছি সেটাতে লেখা আছে ডালিয়া মেয়র হলে কী কী করবেন সেই কথা।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হোসেনে আরা ডালিয়া বলেন, ‘মানুষ সকালে উঠেই পত্রিকা পড়ে। তারা পত্রিকা হাতে নিলেই যেন আমার ইশতেহার দেখতে পায় আমি সেই চেষ্টা থেকেই এটি করেছি। প্রচারণা যেহেতু শেষ রংপুরের মানুষ ইশতেহার পড়ে যেন নৌকায় ভোট দেয় সে প্রত্যাশা আমি করছি।’
এ বিষয়ে ডালিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘কাল ভোট। কে, কীভাবে প্রচার করছে এটা আমি দেখব না। এটা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনে। ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে জয়ী করবে আমি সেটাই দেখছি। কারোর বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই।’