বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রংপুরের ভোটে সাংবাদিকদের ১৩ বিধিনিষেধ

  •    
  • ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৯:২২

দেয়া হচ্ছে না বাইক পাশ, কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া তথ্য সংগ্রহ বা ছবি-ভিডিও তোলা নিষেধ, তবে কোনোক্রমেই গোপন কক্ষের ছবি সংগ্রহ কিংবা ধারণ করতে পারবেন না। একইসঙ্গে একাধিক মিডিয়ার সাংবাদিক একই ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং ১০ মিনিটের বেশি ভোটকেন্দ্র অবস্থান করতে পারবেন না।

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে ইচ্ছুক সাংবাদিকদের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করার জন্য কোনো পাশ দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। আরোপ করা হয়েছে নানা বিধিনিষেধ।

গত ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর এই প্রথম এই ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।

সরকার অনুমোদিত (নিবন্ধিত) অনলাইন নিউজপোর্টালে কর্মরত সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষণ কার্ড ইস্যু করা হচ্ছে না। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতারা।

কোনো সংবাদ কর্মী ভোট কেন্দ্রে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থা করতে পারবে না জানিয়ে ১৩টি নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে।

গত ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান সাক্ষরিত এই প্রজ্ঞাপন জারি করে পত্রটি রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেনকে পাঠানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করে প্রিসাইডিং অফিসারকে জানিয়ে ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং ভিডিও ধারণ করতে পারবেন। তবে কোনোক্রমেই গোপন কক্ষের ছবি সংগ্রহ কিংবা ধারণ করতে পারবেন না।

একইসঙ্গে একাধিক মিডিয়ার সাংবাদিক একই ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং ১০ মিনিটের বেশি ভোটকেন্দ্র অবস্থান করতে পারবেন না। ভোটকক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা, নির্বাচনী এজেন্ট বা ভোটারদের সাক্ষাৎকার নিতে পারবেন না।

ভোটকক্ষের ভেতর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না। সরাসরি সম্প্রচার করতে হলে ভোটকক্ষ থেকে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে তা করতে হবে, কোনোক্রমেই ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না।

ভোট গণনার সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না জানিয়ে বলা হয়, ভোটকক্ষ থেকে ফেসবুকসহ কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না। কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকরা প্রিসাইডিং অফিসারের আইনানুগ নির্দেশ মেনে চলতে হবে।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করা যাবে না বলেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করতে পারবেন না।

সংবাদ সংগ্রহের সময় প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে যে কোনো ধরনের প্রচারণা বা বিদ্বেষমূলক প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার জন্য নির্বাচনি আইন ও বিধিবিধান মেনে চলবেন।

সংবাদ সংগ্রহে নির্বাচন কমিশনের এই নীতিমালা বা নির্দেশনার কয়েকটি বিষয় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতারা।

দৈনিক কালের কণ্ঠের ফটো সাংবাদিক গোলজার হোসেন আদর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তো মফস্বল সাংবাদিকতা করি। আমার তো প্রাইভেটকার নেই, আর ভোটের দিন প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাস ভাড়া নেয়ারও সামর্থ্য নেই। যাদের সামর্থ্য নেই, তারা কীভাবে ভোটের খবর সংগ্রহ করবেন? এটি কেন করা হয়েছে আমাদের জানা নেই।’

গাজী টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক আজম পারভেজ বলেন, ‘আমি মোটরসাইকেলের পাশ নিতে গিয়েছি কিন্তু পরিপত্র দেখিয়ে বলেছে পাশ হবে না।’

তিনি বলেন, ‘ভোটের দিন একটি মাইক্রোবাস ভাড়া নিতে কমপক্ষে ৮ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে। এই টাকা কোথায় পাব আমরা? অবাধ তথ্যের এই যুগে কমিশনকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহবান জানাই আমি।’

রংপুর প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী বলেন, ‘সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না, এটা দুঃখজনক। এ ধরনের নীতিমালার নিন্দা জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের এসব নির্দেশনা স্বাধীন সাংবাদিকতায় এক ধরনের বাধা। আমি আশা করছি, কমিশন এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন।’

বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন রংপুর এর সেক্রেটারি মমিনুল ইসলাম রিপন বলেন, ‘১০ মিনিটের বেশি ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করা যাবে না এ ধরনের নির্দেশনা এর আগে অন্য কোনো নির্বাচনে কখনও শুনিনি। আর এবারই প্রথম নির্বাচন কমিশন থেকে সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে স্টিকার দেয়া হচ্ছে না।

‘আমরা যারা সংবাদ সংগ্রহের কাজে মোটরসাইকেল ব্যবহার করি তারা কীভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করবে সেটাও তো ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে।’

এ ব্যাপারে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, ‘বিগত বিভিন্ন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকেই এবার সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি বা কমিশন প্রদত্ত স্টিকার দেওয়া হচ্ছে না।

‘কারণ অনেক প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থক সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহার করে দ্রুত অপরাধ করে সটকে পড়েন, যা নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ব্যঘাত সৃষ্টি করে। তাছাড়া একটা সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে যা যা করা প্রয়োজন কমিশন সেই আলোকে নীতিমালা করেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর