সরকার উসকানি দিচ্ছে বলে নেতা-কর্মীদেরকে সতর্ক করে দিয়েছে বিএনপি। বলেছে, এই উসকানিতে পা দেয়া যাবে না। বিএনপির শান্তিপূর্ণভাবে ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লক্ষ্য অর্জন করবে।
শুক্রবার দুপুরের পর রাজধানীতে বিএনপির পক্ষ থেকে বের হওয়া বিজয় মিছিলেন আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ মন্তব্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এই মিছিলটি বের হয়। ফকিরাপুল মোড় দিয়ে মালিবাগ ঘুরে আবারও নয়াপল্টনে গিয়েই শেষ হয় সেটি।
বেলা ১২টা থেকেই ব্যানার, ফেস্টুন, ঘোড়ার গাড়ি, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে আসতে থাকে। তারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মতো সেজে একজন অংশ নেন এই মিছিলে। একটি ট্যাংকের প্রতিকৃতিও নিয়ে আসা হয় মিছিলে।
শোভাযাত্রার ব্যানারে লেখা ছিল, ‘নির্যাতিত, নিপীড়িত, অধিকারবঞ্চিত মানুষের জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই হোক, বিজয় দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।’
আরেক ব্যানারে লেখা হয়, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় র্যালি।’
এই মিছিলকে ঘিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য মোতায়েন ছিল।
মিছিল বের হওয়ার আগে খন্দকার মোশাররফ নেতা-কর্মীদের বলেন, ‘সরকার উসকানি দিচ্ছে, মিথ্যাচার করছে এবং ইতিহাস বিকৃত করে কথা বলছে। সরকারের উসকানিতে আপনারা পা দেবেন না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধিতে জনগণকে সঙ্গে আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করব।’
তিনি বলেন, ‘তারা বলেন, আমরা নাকি সন্ত্রাস করতে চাই। সন্ত্রাস যদি এদেশে কেউ করে থাকে তাহলে আওয়ামী লীগ করেছে।’
বিএনপি বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য মাঠে নেমেছে- প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা বিভাগীয় ১০টি সমাবেশে প্রমাণ করেছি- আমরা শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। এই ১০টি সমাবেশের কোনো জায়গায় কোনো অরাজকতা এবং কোনো বিশৃঙ্খলা হয় নাই। অথচ প্রধানমন্ত্রী বললেন, আমরা নাকি বিশৃঙ্খলা করার জন্য সমাবেশ করি।’
গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের পর নগরে এটি বিএনপির দ্বিতীয় জমায়েত। এর আগে ১৩ ডিসেম্বর নয়াপল্টনেই মিছিল ও সমাবেশ করে দলটি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘এই সরকারকে দেশের মানুষ চায় না। আমাদের বিভাগীয় সমাবেশগুলোর মাধ্যমে এই বার্তা দিয়েছে দেশের মানুষ। এটা যখন তারা বুঝতে পেয়েছে, তখন তারা দিশেহারা হয়ে নানা রকম কথা-বার্তা বলছেন। আর সরকার যখন দেখছে যে তাদের দিন শেষ, সেজন্য দেশে-বিদেশের মানুষকে প্রতারণা করার জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে।’
তিনি বলেন, ‘একটি সংকটের মধ্যে দিয়ে বাংলাদোশ অতিক্রম করছে। গায়ের জোরে ক্ষমতায় এসে তা ঠিকিয়ে রাখার জন্য তারা এই সংকট সৃষ্টি করেছে। তারা আজকে দেশে-বিদেশে অগণতান্ত্রিক, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী এবং হাইব্রিট সরকার নামে পরিচিত।’
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির পক্ষ থেকে দেশবাসীকে বিজয়ের শুভেচ্ছাও জানান মোশাররফ।
শোভাযাত্রায় বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল মঈন খান, বেগম সেলিমা রহমান, আব্দুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মো. শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমদ আযম খান, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মীর সরাফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, নাজিম উদ্দিন আলম, তাইফুল ইসলাম টিপু, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনুসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠসের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।