বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের কারাগারে সময় কাটছে বই পড়ে। তবে কারাগারে থেকেও তারা নেতা-কর্মীদের খোঁজখবর নিচ্ছেন।
মির্জা ফখরুলের সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগম ও মির্জা আব্বাসের সহধর্মিণী আফরোজা আব্বাস বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে বুধবার তারা কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বিএনপির এই দুই নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
কারাগারে যাওয়ার তিন দিন পর মঙ্গলবার তাদের ডিভিশন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। পরদিন বুধবার ডিভিশন কক্ষ পান বিএনপির এই দুই নেতা। তার আগপর্যন্ত চার দিন তাদের বেশ কষ্ট করতে হয়েছে বলে জানান তাদের স্ত্রীরা।
রাহাত আরা বেগম বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) সকালে সাক্ষাৎ করে এসেছি। কারাগারে নেয়ার পর এই প্রথম তার সঙ্গে দেখা হলো। শরীর আছে মোটামুটি ঠিকই আছে। তবে এমনিতেই ওনার নানা রকম অসুস্থতা আছে। তবে ভেঙে পড়েননি, মনোবল শক্ত আছে।’
মির্জা ফখরুলকে কিছু বইপত্র, হালকা খাবার আর ওষুধ দিয়ে এসেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আগেই তাকে কিছু বই পাঠানো হয়েছিল। আরও কিছু নিয়ে এলাম। শিক্ষক মানুষ, বই পড়া তার নিত্যদিনের অভ্যাস। এখন সেটা কারাগারে প্রতিদিনের সঙ্গী।’
মহিলা দল সভাপতি আফরোজা আব্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ডিভিশন পাওয়ার আগে ওনাদের নরমাল কয়েদির সঙ্গে ফ্লোরে থাকতে হয়েছে। ওই তিন/চারদিন তাদের বেশ কষ্ট করতে হয়েছে।
‘এর মধ্যে কারাগারে বাথরুমে পড়ে গিয়ে গোড়ালিতে ব্যথা পেয়েছেন। ওনার শরীরটা একদমই ভালো নেই। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দিয়ে এসেছি। ওনার জন্য সবাই দোয়া করবেন।’
কারাগারে মির্জা আব্বাস কীভাবে সময় কাটাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গতকাল ওনাকে রাজনৈতিক ও মেডিক্যাল সায়েন্সের কিছু বই দিয়ে এসেছি। কোরআন শরিফও। এভাবেই কাটছে আর কী।’
তবে কারাগারে থেকেও দলের নেতা-কর্মীদের খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা করেছেন জানিয়ে আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘ওনার শরীর ভালো না, কিন্তু নেতা-কর্মীদের খোঁজ নিয়েছেন। মনোবল দৃঢ় আছে।’
৯ ডিসেম্বর ভোর ৩টার দিকে উত্তরার বাসা থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও শাহজাহানপুরের বাসা থেকে মির্জা আব্বাসকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর একাধিকবার জামিন আবেদন করলেও তা নাকচ করে দেয়া হয়। এরপর ৯ তারিখ ডিভিশন রিট করা হলে ১৩ তারিখ তাদের ডিভিশন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তারা ডিভিশন কক্ষ পান পরদিন বুধবার।
মির্জা ফখরুল এই সরকারের আমলে আরও পাঁচবার কারাগারে গেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ৮৭টি।
আর মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ৫৭টি। ১/১১-এর সময়ে গ্রেপ্তার হয়ে তিনি দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও কয়েক দফা কারাগারে যান বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।