বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘মায়ের কান্না’য় বিব্রত হাস, মোমেনের কাছে অনুযোগ

  •    
  • ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৯:৫০

সকালে ২০১৩ সালে বিএনপির নিখোঁজ নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় যান পিটার হাস। সে সময় সেখানে উপস্থিত হন আরও একটি সংগঠনের সদস্যরা, যারা জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৭৭ সালে বিমান বাহিনীতে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহের শাস্তির দাবি করেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের দূতকে একটি স্মারকলিপি দেয়ার চেষ্টা করেন।

নিখোঁজ বিএনপি নেতার বাসায় যাওয়ার পর ‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা অনির্ধারিতভাবে কাছে চলে যাওয়ার ঘটনায় অসন্তোষ জানিয়েছেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস।

এই ঘটনায় আমেরিকান কর্মকর্তা ঘাবড়ে যান। এরপর তার প্রোটোকল কর্মীদের সহযোগিতায় দ্রুত ওই এলাকা ত্যাগ করে সোজা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চলে যান। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে পুরো ঘটনা খুলে বলেন।

বুধবার সন্ধ্যায় মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই অস্বাভাবিক ঘটনায় কিছুটা ঘাবড়ে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দূত। তিনি দুশ্চিন্তায় আছেন। অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তবে তিনি চাইলে তাকে অধিক নিরাপত্তা দেয়ার কথা জানানো হয়েছে।’

এদিন সকালে ২০১৩ সালে বিএনপির নিখোঁজ নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের শাহীনবাগের বাসায় যান পিটার হাস। সেখানে তিনি অবস্থান করেন প্রায় ২৫ মিনিট। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের দূতের এই সফর যে সরকারের পছন্দ হয়নি, সেটি পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্পষ্ট করেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায়, সরাসরি বিষয়টি নিয়ে কথা না বললেও আওয়ামী লীগ সভাপতি যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে বলেন, ‘আমেরিকা খুনিদের মানবাধিকার নিয়ে ব্যস্ত।’

ওবায়দুল কাদের সরাসরিই বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাহেব আজকে ভোরবেলায় বুদ্ধিজীবী দিবসে সাজ্জাদুল সুমনের বাড়িতে গেলেন। ২০১৩ সালে গুম হয়েছিল। তার বাড়িতে উনি গেলেন, আমি সবিনয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে কতজন গুম হয়, সেই চিত্রটা কিন্তু সিএনএনে আমরা দেখেছি। কতজন ধর্ষিত হয় নারী, সেটাও আমরা দেখেছি। কতজন খুন হয় সেই চিত্রও আমরা দেখেছি।’

পিটার হাস যখন সুমনের বাসায় যান, সে সময় সেখানে উপস্থিত হন আরও একটি সংগঠনের সদস্যরা, যারা জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৭৭ সালে বিমান বাহিনীতে ঘটে যাওয়া ঘটনাপ্রবাহের শাস্তির দাবি করেন।

সে সময় সেনা ও বিমান বাহিনীর নিখোঁজ সদস্যদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের কান্না’ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের কাছে দেয়া স্মারকলিপি দেয়ার চেষ্টা করে। এতে ৪৫ বছর আগের গুমের ঘটনা আন্তর্জাতিক তদন্ত চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সামরিক শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহযোগিতা চান।

স্পষ্টতই পিটার হাস এটা পছন্দ করেননি। পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে গিয়ে তারই বহিপ্রকাশ ঘটালেন।

নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল হক সুমনের শাহীনবাগের বাসায় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আজকে হঠাৎ করে জরুরি ভিত্তিতে আমার সঙ্গে দেখা করেন। আমার সঙ্গে দেখা করে আমাকে উনি বললেন, উনি একটি বাসায় গিয়েছিলেন। সেখানে অনেক লোক ছিল। উনি গিয়েছিলেন একটি বাসায়। কিন্তু বাইরে অনেক লোক ছিল।

‘তারা উনাকে একটা কিছু বলতে চাচ্ছিল। উনার সিকিউরিটির লোকরা উনাকে বলেছে, আপনি তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যান। এই লোকরা আপনার গাড়ি ব্লক করে দেবে। তিনি তখন তাড়াতাড়ি সেখান থেকে চলে যান। এই ঘটনায় উনি খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছেন।’

মোমেন বলেন, “আমি উনাকে বললাম, আপানার নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব আমাদের। আপনার উপর বা আপনার লোকদের উপর কেউ আক্রমণ করেছে? উনি বললেন, ‘না’। তবে উনার গাড়িতে হয়তো দাগ লেগেছে। তবে উনি শিওর না।

“আমি বললাম আপনার এবং আপনার লোকজনকে আমরা নিরাপত্তা দেবো। আপনি আরও অধিকতর নিরাপত্তা চান আমরা দেবো। তবে আপনি যে ওখানে গেছেন, এই খবরটা কে প্রকাশ করল, আমরা তো জানি না। আমরা আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছুই জানি না। আপনারা আমাদের কিছুই জানানওনি। আপনি ওখানে যাবেন, এই তথ্যটা লিক করল কে। উনি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি।”

মোমেন বলেন, ‘আমি তাকে আবার বলেছি, আপনার নিরাপত্তা দেবো। কিন্তু আপনি বের করেন আপনার যাওয়ার খবরটা কে বের করল। উনি দুশ্চিন্তায় আছেন। আমি উনাকে বলেছি, আমাদের মিডিয়া খুবই সোচ্চার। তারা যে কোনো কিছুর পেছনে লেগে থাকে। তাদের আমি বাধা দিতে পারব না। কারণ আমাদের দেশে ফ্রিডম অব মিডিয়া খুবই স্ট্রং। তবে আমি তাদের ডিস্টেঞ্জ রাখতে পারব। ১০ ফুট, ১৫ ফুট।

‘আমাদের ওখানে লোকজন গেছে সেটাও আমি বাধা দিতে পারবো না। তবে কেউ যদি আপনার ওপর আক্রমণ করে, সম্পদ ধ্বংস করে আমি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবো। আপনার থেকে সবাইকে দূরে রাখতে পারব।’

এর আগে ২০১৮ সালের আগস্টে ঢাকার মোহাম্মদপুরে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে আচমকা হামলা চালায় একদল যুবক। সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় নৈশভোজ থেকে ফেরার পথে ওই ঘটনা ঘটেছিল।

এ বিভাগের আরো খবর