জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের মধ্যে জিএম কাদের আপাতত চেয়ারম্যান থাকতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে আপিল বিভাগ। এ সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি বিচারিক আদালতেই করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
দলটির এক নেতার মামলার পর এই সিদ্ধান্ত নিল সর্বোচ্চ আদালত। কোনো দলের নেতৃত্বে কে থাকবেন, না থাকবেন, এ বিষয়ে এই প্রথম সিদ্ধান্ত এলো আদালত থেকে।
বুধবার এই সিদ্ধান্ত জানায় প্রধান বিচারপতিসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা তার দলের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সেনা শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী ও দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ দলের কাউন্সিল ঘোষণার পর তা অনুসারী মৃধাকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয় জি এম কাদেরের সিদ্ধান্তে।
জাতীয় পার্টিতে চেয়ারম্যানের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ। মৃধাকে দল থেকে বের করে দেয়ার তিন দিন আগে বহিষ্কার করা হয় রওশনপন্থি আরেক নেতা মসিউর রহমান রাঙ্গাকে। তবে পরে রওশন কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
এর আগে গত ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আজিজকে বহিষ্কার করা হয়।
তার বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ না করে মৃধা চ্যালেঞ্জ করেন জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান হওয়ার সিদ্ধান্তকেই। তিনি গত ৪ অক্টোবর জি এম কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়েই মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মারা যান। বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকার পরও জি এম কাদের জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছর ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন।
মৃধার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জি এম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে অস্থায়ী আদেশ দেয়।
এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন জি এম কাদের। তার আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়ালের একক বেঞ্চ বিচারিক আদালতের আদেশ স্থগিত করে। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন জিয়াউল হক মৃধা।