বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিশু মাইশার মৃত্যু: ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হলো দেহ

  •    
  • ১২ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৮:৪৭

ঢাকার রূপনগরের আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে গত ৩০ নভেম্বর হাতের আঙুলে অস্ত্রোপচারের সময় মারা যায় কুড়িগ্রামের শিশু মাইশা। এরপর বেরিয়ে আসে হাসপাতালটি অনুমোদন ছাড়াই চলছিল।

হাতের আঙুলের অস্ত্রোপচারের সময় মারা যাওয়া কুড়িগ্রামের ছয় বছরের শিশু মারুফা জাহান মাইশার ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়েছে।

এ-সংক্রান্ত মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দাফনের ১২ দিনের মাথায় সোমবার বেলা ৩টার দিকে মাইশার মরদেহ কবর থেকে তুলে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মঙ্গলবার পাঠানো হবে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

ঢাকার রূপনগরের আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে গত ৩০ নভেম্বর হাতের আঙুলে অস্ত্রোপচারের সময় মারা যায় কুড়িগ্রামের শিশু মাইশা। এরপর বেরিয়ে আসে হাসপাতালটি অনুমোদন ছাড়াই চলছিল।

মাইশার মৃত্যুর পর থেকে আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালটির সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মাইশাকে ওই হাসপাতালে পাঠানো এবং অস্ত্রোপচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রূপনগর থানায় মামলা করেছেন মাইশার বাবা।

বিষয়টি নিয়ে ৫ ডিসেম্বর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা।

আরও পড়ুন: শিশু মাইশার মৃত্যু: অনুমোদন ছাড়াই চলছিল ঢাকার সেই হাসপাতাল

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রূপনগর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে আইনের ধারা অনুযায়ী মাইশার মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়েছে। আদালতে মাইশার মরদেহ উত্তোলন করে নতুন করে ময়নাতদন্তের আবেদন করা হয়েছিল।

‘আদালতের আদেশের কপি হাতে পাওয়ার পর একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার মরদেহ আজ (সোমবার) বিকেলে উত্তোলন করা হয়েছে।’

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনো ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ না থাকার কারণে মাইশার মরদেহ সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার রংপুর মেডিক্যাল কলেজে মাইশার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে।’

তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে পুলিশ পরিদর্শক নয়ন দাস বলেন, ‘এই মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আমরা মরদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে কিছুই বলতে পারব না। বিষয়টি তদান্তাধীন।’

কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভেলাকোপা ব্যাপারী পাড়ার মোজাফফর আলী ও বেলি আক্তারের মেয়ে মাইশা। তার ডান হাতের আঙুল ৯ মাস বয়সে পুড়ে বাঁকা হয়ে যায়।

মোজাফফর হোসেন মেয়ের চিকিৎসার জন্য গত ২৮ নভেম্বর মিরপুর ১১-এর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে আসেন। ওই হাসপাতালে রোগী দেখেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি) ডা. আহসান হাবীব। মাইশাকে তার কাছেই দেখানো হয়।

মোজাফফর হোসেনের অভিযোগ, ডা. আহসান হাবীব মাইশার হাতে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। পরদিন অভিভাবকরা সম্মতি দিলে ডা. হাবীব তাদের জানান, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করতে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা লাগবে। আর রূপনগর আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে খরচ হবে ৭০ হাজার টাকা।

আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিজের শেয়ার থাকায় কম খরচে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করতে পারবেন বলেও জানান ডা. হাবীব।

স্বজনদের দাবি, ৩০ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে মাইশার অস্ত্রোপচার শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডা. হাবীব অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে জানান অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। হাতের আঙুলে প্রতিস্থাপনের জন্য চামড়া নেয়া হয়েছে মাইশার পেট থেকে।

তবে বেলা দেড়টার দিকে ডা. হাবীব স্বজনদের জানান মাইশার জ্ঞান ফিরছে না। তাকে অন্য হাসপাতালের আইসিইউতে পাঠাতে হবে। তিনি নিজেই অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে একজন নার্স, ওয়ার্ড বয়সহ মিরপুর মাজার রোডের গ্লোবাল স্পেশালাইজড হসপিটালে নিয়ে যান। তবে সেখানকার চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান মাইশা আগেই মারা গেছে।

মাইশার মামলার এজাহারে বলেন, মাইশার মৃত্যুর পর ডা. হাবীব তড়িঘড়ি করে অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সেই সঙ্গে অস্ত্রোপচারের আগাম ফি হিসেবে জমা দেয়া ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেয়া হয়।

অভিযোগে বলা হয়, মরদেহ দাফনের আগে গোসলের সময় দেখা যায় মাইশার নাভির নিচে আড়াআড়িভাবে পুরো পেট কাটা এবং সেখানে ১৭টি সেলাই রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্বজনরা ডা. হাবীবকে ফোন করলে তিনি তখন জানান, অস্ত্রোপচার তিনি করেননি, সেটি করেছেন ডা. শরিফুল ইসলাম ও ডা. রনি।

এরপরেই আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালের অবস্থান যেখানে সেই রূপনগর থানায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় মাইশার পরিবার। তাদের অভিযোগ, মাইশাকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর