রাজধানীর গোলাপবাগে বিএনপির সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে। আগের দিন বিকেল থেকে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান শেষে মাঠ ছেড়েছেন দলের নেতা-কর্মীরা।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপির ধারাবাহিক বিভাগীয় সমাবেশের অংশ হিসেবে শনিবার এই জমায়েতের আগে উত্তেজনা ছড়ালেও মাঠে তার প্রভাব দেখা যায়নি।
সকাল ১০টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া সমাবেশ শেষ হয় প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।
সমাবেশস্থল নিয়ে বিরোধের মধ্যে গত বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হলেও গোলাপবাগের এই সমাবেশে কোনো ধরনের গোলযোগ হয়নি। নেতা-কর্মীরা নির্বিঘ্নে এসেছেন, বাড়িও ফিরছেন নির্বিঘ্নে।
বিকেল ৪টা ২৬ মিনিটে সমাবেশ সমাপ্তের ঘোষণা দেয়ার পর নেতারা তাদের কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফেরার পরামর্শ দেন।
সমাবেশ শেষে নেতা-কর্মীরা মিছিল করতে করতে বাড়ি ফিরছেন। তাদের বক্তব্য, এই সমাবেশ সফল হয়েছে। তাদের ভাষায়, নানা বাধার পরও তারা জমায়েত হতে পেরেছেন এবং এটিই তাদের সার্থকতা।
চট্টগ্রাম থেকে আসা বিএনপি নেতা মো. সুমন বলেন, ‘সরকার অনেক চেষ্টা করেছে আমাদের সমাবেশ বানচাল করার জন্য। কিন্তু সফল হয় নাই। আমাদের সমাবেশ সফল হয়েছে। নেতারা আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরতে বলেছেন। আমরা এখন সেটাই করব।’
ময়মনসিংহ থেকে আসা যুবদল নেতা জসীম উদ্দিন বলেন, ‘যত চেষ্টাই করা হোক না কেন বিএনপিকে দমানো যাবে না। আমরা সমাবেশ করেছি। পুলিশ বাহিনী দিয়ে আমাদের কিছুই করতে পারে নাই আওয়ামী লীগ সরকার। নেতারা আজকে যে দিকনির্দেশনা দিয়েছে সেটাকে সম্বল করে বাড়ি ফিরছি। উপরের নির্দেশনা মতো পরবর্তী পদক্ষেপে যাব আমরা।’
শুক্রবার বিকেলে গোলাপবাগ মাঠ সমাবেশের জায়গা নির্ধারণ হওয়ার পর থেকে নেতা-কর্মীরা মাঠে জড় হতে শুরু করেন। ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতা-কর্মীরা অনেকেই রাতে সমাবেশের মাঠে রাত কাটান।
এই সমাবেশ থেকে সরকার পতন আন্দোলনের রূপরেখা, সমমনা দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরুসহ বড় ঘোষণা দেয়ার কথা বলে আসছিলেন বিএনপির নেতারা। তবে শেষ পর্যন্ত আগের ৯টি বিভাগীয় সমাবেশে তোলা দাবিগুলোকে এক করে ১০ দফা ঘোষণা করা হয়। এতে গত কয়েক মাস ধরে তোলা দাবির বাইরে কিছু নেই।
যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী হিসেবে বিএনপি যাদের চাইছে, তাদের কেউ এই সমাবেশে যোগ দেয়নি। আর কর্মসূচিও হয়েছে নমনীয়। ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় মিছিলের ডাক দেয়া হয়েছে। এর আগে ১৩ ডিসেম্বর আরও একটি মিছিল হবে, সেটি হবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুক্তির দাবিতে।