দেশের বর্তমান পরিস্থিতি জাহান্নামের চেয়ে খারাপ জানিয়ে সরকারবিরোধী জোরাল আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়েছেন নতুন রাজনৈতিক জোট গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব। জানিয়েছেন, জেলে যেতে তিনি প্রস্তুত। এ জন্য প্রয়োজনীয় কাপড় ও ওষুধসহ সুটকেস তৈরি করে সঙ্গে রাখেন।
শুক্রবার রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় জোটের শরিক সংগঠন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রস্তুতির কথা জানান রব, যিনি এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোট বর্জনের পর সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে ভোটে গিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা হয়েছিলেন।
সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে কয়েক মাস আগে সাতটি ছোট দল ও সংগঠন মিলে গঠন করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। তারা নিজেরা তৃতীয় শক্তি হওয়ার কথা বলছে, পাশাপাশি বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যাওয়ার ইচ্ছার কথাও বলেছে।
আ স ম রব বলেন, ‘আমি স্যুটকেসে কাপড় চোপড়, ওষুধ নিয়ে আসছি। আপনারা দেখতে চাইলে যান। আমার গাড়িতে। নিয়ে যাবেন জেলখানায়? ফখরুলকে নিয়েছেন। আব্বাসকে নিয়েছেন। হাজার কর্মীকে জেলখানায় নিয়েছেন।’
৮০ বছর বয়সেও মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত জানিয়ে এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘এই সরকারকে আর সুযোগ দেয়া যায় না। আর কত রক্ত চান? আর কত জীবন চান। অত্যাচারের সীমা আছে। আমি ঘরে বসে থাকতি পারি না।
‘আমি কোনো কথা শুনি নাই, শুনব না। অন্যায়, অত্যাচার জুলুম কোনোদিন সহ্য করি নাই। বাধা দিলে বাঁধবে লড়াই। জনগণকে জিততে হবে আমাদেরকে জিততে হবে। জনগণ কোনোদিন পরাজিত হয় না।’
গত বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর দলীয় কার্যালয়ে পুলিশের অভিযানের ঘটনায় সেখানে যাওয়ার ঘোষণা ছিল গণতন্ত্র মঞ্চের। এই জোট সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেও রব জানান, তিনি সেখানে যাবেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি অফিসে তছনছ করেছে সেটা দেখতে যাওয়া আমরা যাব। জনগণকে বাধা দেয়ার ক্ষমতা আপনাদের নেই।’
জেএসডি নেতা বলেন, ‘বিএনপি পার্টির অফিসের সামনে গুলি করে মানুষ হত্যা... কী এমন ঘটনা ঘটেছিল যে গুলি করতে হবে?
‘বিএনপি অফিস নয় শুধু একটা রাষ্ট্রের ভৌগলিক সীমার মধ্যে যে কোনো অফিস ভেঙে ফেলা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গুলি করে নাগরিক হত্যা... এভাবে দেশটাকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা
যে হাত মারতে আসবে, সে হাত ভেঙে দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়েও কথা বলেন প্রতিক্রিয়া জানান রব। বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে হাত ভেঙে দেবে। আগুন লাগিয়ে দেবে৷ এটা কী? কোন ধরণের আচরণ। কোন ধরনের মন্তব্য?
‘সরকার জনগণের হাত ভেঙে দিতে বলছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে দেশকে গৃহযুদ্ধের ঠেলে দিচ্ছে।
‘জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছে আইন ভঙ্গ করার জন্য। তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী না। অন্য কাউকে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। আপনারা নির্বাচনে বিশ্বাস করেন না।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাও এ সময় বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা সাইফুল হক প্রমুখ