বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সুনসান নয়াপল্টন

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ২৩:২৯

১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল সরগরম। তবে বুধবার পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের পর কার্যালয়টি ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে। লোকারণ্য এলাকায় বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা।

একদিন আগেও নয়াপল্টন এলাকায় ছিল বিএনপি নেতা-কর্মীদের ভিড়। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলীয় কার্যালয় ছিল সরগরম। তবে বুধবার পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের পর কার্যালয়টি ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে। লোকারণ্য এলাকায় বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা।

সংঘর্ষের পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কটির নিয়ন্ত্রণে ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। সকালে সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ রাখা হলেও বিকেলের দিকে তা খুলে দেয়া হয়। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক থাকায় সড়কটিতে চলাচল ছিল খুবই কম। সন্ধ্যার পরিবেশ হয়ে ওঠে পুরোপুরি ভুতুরে।

নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয় ছাড়াও গাজী ভবন, পলওয়েল মার্কেট, চায়না টাউন, সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্সসহ বেশ কয়েকটি বড় মার্কেট রয়েছে। এ কারণে সন্ধ্যার পরও এলাকাটি মানুষের পদচারণায় গমগম করতে থাকে। তবে বৃহস্পতিবার রাতের চিত্র ছিল সম্পূর্ন বিপরীত।

রাতে কাকরাইল মোড় থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পেরিয়ে নয়াপল্টনে উঠতে স্কাউট ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় পুলিশের হলুদ রঙা একটি জলকামান, একটি ছাই রঙা আর্মড ভেহিকেল (এপিসি) আর নীল রঙা একটি পুলিশ ভ্যান। এছাড়াও সড়কটির দুপাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি পুলিশের গাড়ি।

সড়ক দ্বীপে যে ট্রাফিক পুলিশ বক্সটি রয়েছে সেখানে অলস সময় কাটাচ্ছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। নয়াপল্টনের প্রবেশমুখে কয়েকজন পুলিশ সদস্য দাঁড়িয়ে আছেন। সিএনজি অটোরিকশা বা রিকশায় করে যারা এই সড়কটি ব্যবহার করছেন তাদের পরিচয় জানতে চাওয়া হচ্ছে পুলিশের তরফে।

এর একটু সামনে এগোলেই হাতের বামে থাকা গাড়ির শো-রুমগুলো বন্ধ দেখা যায়। শান্তিনগর বাজার থেকে যে গলি মূল সড়কে এসে মিলেছে, সেটির মুখে বেরিক্যাড দিয়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। গলি থেকে কেউ মূল সড়কে আসতে চাইলে তাদের পরিচয় এবং আসার কারণ জানতে চাচ্ছেন তারা।

রাস্তার বিপরীতে থাকা স্কাউট মার্কেটের সবগুলো দোকানই ছিল বন্ধ। মার্কেটের আশপাশে এবং হোটেল ভিক্টরির গলিমুখেও প্রচুর পুলিশ সদস্যের দেখা মিলে। বিএনপির মূল কার্যালয়ের প্রবেশমুখ ও আশপাশেও পুলিশের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

অন্যান্য সময় এই সড়কটিতে পথচারীদের চলাচল থাকলেও বৃহস্পতিবার রাতে তা খুব একটা চোখে পড়েনি। কয়েকটি রিকশাকে যাত্রীর আশায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এই সড়কটিতে যে কয়েকটি মার্কেট রয়েছে সেগুলোর সবই ছিল বন্ধ।

নয়াপল্টন জামে মসজিদ সংলগ্ন যে গলিটি আবাসিক এলাকার দিকে চলে গেছে সেটির গেট পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে করে কোনো যানবাহন প্রবেশ বা বাইরে আসতে পারছে না। তবে ছোট একটি গেট খোলা রয়েছে পায়ে হেঁটে যাতায়াতের জন্য।

অন্যদিকে জোনাকি সিনেমা হল ও গাজী ভবন সংলগ্ন যে গলিটি শান্তিনগর এলাকার দিকে গিয়েছে সেটিও বন্ধ করে রেখেছে পুলিশ। ভেতর থেকে কেউ মূল সড়কে আসতে চাইলেই পড়তে হচ্ছে পুলিশি জেরার মুখে।

দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দিতেই গলিগুলোর মুখে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে।’

তবে স্থানীয়রা বলছেন, বুধবারের সংঘর্ষের পর থেকেই এলাকাটি নীরব।

জোনাকি গলি এলাকার ফার্মেসি দোকানের কর্মচারী মো. ফরিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূল সড়কের সব দোকান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে গলির ভেতরে কয়েকটি খাবারের দোকান আর মুদি দোকান খোলা রয়েছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় এগুলোতে সাধারণ মানুষের আনাগোনাও ছিল কম।’

বুধবার বিকেলের দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলিতে নিহত হন মকবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি।

সংঘর্ষের পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে অন্তত ২১ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা করা হয়েছে। এতে ৪৫০ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মামলায় অজ্ঞাত আসামি আছে জানিয়ে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, আরও কয়েকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।

আসামিদের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন।

এদিকে মতিঝিল থানায় সরকারি কাজে বাধা, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।

এ মামলায় ২৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া শাহজাহানপুর থানায় পুলিশ আরেকটি মামলা করেছে, যাতে ৫২ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ওই মামলায় অজ্ঞাত আসামি ২০০ থেকে ২৫০ জন।

এ বিভাগের আরো খবর